আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া ইসরায়েলের গোপন প্রতিশ্রুতি ফাঁস হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনটিতে ওয়াশিংটন পোস্ট, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতো সংবাদমাধ্যমের বরাত দেওয়া হয়েছে।
ইরানে যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেই হামলার ছক কষছেন। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব। বিশেষ করে ইরানের পারমাণবিক বা তেল স্থাপনায় আঘাত হানলে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়ানো এক প্রকার অসম্ভব। তাই ইসরায়েলকে দমিয়ে রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। সেসব বৈঠকের সিদ্ধান্ত গোপন রাখে দেশ দুটি।
কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েল বলেছে-তারা ইরানের পারমাণবিক বা তেল স্থাপনায় আঘাত করবে না।
ইসরায়েল হোয়াইট হাউসকে আশ্বস্ত করেছে, ইরানের ওপর পরিকল্পিত প্রতিশোধমূলক হামলার যে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে তাতে পরমাণু বা তেল স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে না। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু হোয়াইট হাউসকে একটি সম্ভাব্য পাল্টা হামলার কথা জানিয়েছেন এবং বলেছেন, তারা কেবল ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্যবস্তু করার কথা ভাবছে।
‘ইসরায়েলকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ হলে যুদ্ধও বন্ধ হবে’
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালও বেনামি মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও নেতানিয়াহুর মধ্যে একটি ফোনালাপ হয়। পাশাপাশি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের মধ্যে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে কয়েকবার কথা হয়েছে। সেসব কথোপকথনে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে একই প্রতিশ্রুতি এসেছে।
ইসরায়েলের হামলায় হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরওল্লাহ নিহতের প্রতিক্রিয়ায় গত ১ অক্টোবর ইরান দেশটিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ। এরপরই ইসরায়েল পাল্টা আক্রমণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রস্তুতি শুরু করে। কিন্তু এখনও তারা হামলা করেনি। ধারণা করা হচ্ছে, নেতানিয়াহু মোক্ষম সময়ের অপেক্ষা করছেন।
এদিকে লেবাননে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। এবার তারা উত্তরে খ্রিস্টান অধ্যুষিত জঘর্তা জেলার একটি গ্রামে বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে ১৮ জন নিহত এবং ৪ জন আহত হয়েছেন।
গাজা যুদ্ধ শুরুর পর সোমবার (১৪ অক্টোবর) উত্তর লেবাননে এই প্রথমবার এমন হামলা চালালো ইসরায়েল।
এর আগে রোববার রাতে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। হিজবুল্লাহর ২০০ লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে, যা দেশটির জন্য একটি বড় আঘাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পাশাপাশি গাজায়ও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
লেবাননের রেডক্রস জানিয়েছে, বিমান হামলা জঘর্তা জেলার একটি খ্রিস্টান অধ্যুষিত গ্রামে সংঘটিত হয়েছে। এ অঞ্চলটি হিজবুল্লাহর শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এলাকাগুলো থেকে অনেক দূরে অবস্থিত।
স্থানীয় জনগণ এবং লেবাননের সরকারের মতে, এই হামলার শিকার হওয়া গ্রামটি যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল না। এর ফলে হামলাটিকে সুশীল সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোও নিন্দা জানিয়েছে।'
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.