
অনলাইন ডেস্ক: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ভয়াবহ হামলার পর তেহরানের সঙ্গে চলমান সংঘাত দ্রুত সমাপ্ত করতে চায় ইসরায়েল। এই লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র তার আরব মিত্রদের মাধ্যমে ইরানের কাছে তেলআবিবের বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর বরাতে সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে আরব ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ইসরায়েল এখন সংঘাত বন্ধে প্রস্তুত, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ইরানের হাতে। ইসরায়েলি চ্যানেল-১২ জানায়, ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের অভিযানের মাধ্যমে ইরানকে ব্যালিস্টিক ও পারমাণবিক হুমকি থেকে নিষ্ক্রিয় করার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল, এবং তারা মনে করছে, কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন প্রায় সম্পন্ন।
আরব দেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েল যুদ্ধ থামাতে প্রস্তুত থাকলেও ইরান এখনো পাল্টা জবাব দেওয়ার অপেক্ষায়।
টাইমস অব ইসরায়েল-কে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরান যদি পারমাণবিক কর্মসূচি স্থগিত করে, আমরা তখনই হামলা থামাতে পারি।’ তিনি জানান, অভিযান বন্ধের দুটি বিকল্প রয়েছে—ইসরায়েলের একতরফা ঘোষণা অথবা উভয় পক্ষের সম্মতিতে যুদ্ধবিরতি; তবে ইসরায়েল দ্বিতীয় বিকল্পকে কম গ্রহণযোগ্য মনে করছে।
এদিকে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াল্লা জানিয়েছে, সোমবার তেহরানে সরকার-নিয়ন্ত্রিত কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ইরানকে বার্তা দেওয়া হয়েছে—যুদ্ধ বন্ধ না করলে হামলার মাত্রা আরও বাড়বে। নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে, যুদ্ধ থামানোর পথে প্রধান বাধা হচ্ছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি, যিনি এখনো ‘প্রতিরোধের নীতি’তে অনড়।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা আশা করছেন, যৌথ হামলা ইরানকে আলোচনায় ফিরিয়ে আনবে এবং শেষ পর্যন্ত পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগে বাধ্য করবে। তবে নতুন করে কর্মসূচি চালুর চেষ্টা হলে আবারও সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছে তেলআবিব।
রবিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমরা কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে গুরুতর আঘাত হানা হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ আমাদের উদ্দেশ্য নয়, তবে প্রয়োজনীয় ফল না পাওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।’
সূত্র: ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, টাইমস অব ইসরায়েল, চ্যানেল-১২, ওয়াল্লা