অনলাইন ডেস্ক: সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি গোপন নথি ইঙ্গিত দেয়—রাশিয়া ইরানকে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমান ও সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহ করছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের ভারসাম্য বদলে দিতে পারে এবং ইসরাইলের জন্য নতুন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে। নথিটি হ্যাক করে প্রকাশ করেছে হ্যাকার গ্রুপ ব্ল্যাকমিরর।
নথির খসড়া অনুযায়ী, রাশিয়ার রোস্টেক কর্পোরেশন ও তার সাবকনসার্ন রেডিও ইলেকট্রনিক টেকনোলজিক্স থেকে ইরানকে গ্রাহক কোড ৩৬৪ হিসেবে উল্লেখ করে প্রায় ৬ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের চুক্তি করা হয়েছে। সেখানে ইরানের জন্য ৪৮টি আধুনিক ফাইটার জেট কেনার বিষয়ে বন্দোবস্ত আছে—যা সূত্রটিতে রাশিয়ার কিংবদন্তি ‘ফ্ল্যাঙ্কার’ পারিবারের আধুনিক সংস্করণ হিসেবে বর্ণিত।
রপ্তানি চুক্তির পাশাপাশি নথিতে উল্লেখ আছে, রাশিয়া শুধু যুদ্ধবিমান রপ্তানি করবে না, ইরানের ভূখণ্ডে ইতোমধ্যে প্রকৌশলী ও কনসালট্যান্ট পাঠিয়ে সম্ভাব্য ‘সংযোজন ও উৎপাদন’ প্রজেক্টেও সহায়তা শুরু করেছে। সূত্রে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শুরু থেকেই রুশ প্রকৌশলীরা ইরানে অবস্থান করছে এবং ভবিষ্যতে ইরান নিজেদের মাঠে স্তরের কপি-অ্যাসেম্বলি বা নির্মাণ সক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে—যাতে পরবর্তী সময়ে সংখ্যা বাড়িয়ে ৪৮ থেকে ৭২টি ফাইটার জেট উৎপাদনের সম্ভাবনা তৈরি হবে। সূত্রে সময়সীমা হিসেবে উল্লেখ আছে, ২০২৬ সাল থেকে এসব বিমান ধাপে ইরানের হাতে পৌঁছাতে পারে।,
কেন তা বিপজ্জনক?
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের আধুনিক ফাইটার জেট ইরানের আকাশীয় সক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে—এটি কেবল ইজরায়েলের জন্য সামরিক হুমকি নয়, বরং পুরো অঞ্চলের কৌশলগত ভারসাম্যকে প্রভাবিত করবে। নথিতে আরও বলা হয়েছে, ইরান ইতোমধ্যেই ব্যাবহারিক ক্রস-সামরিক প্রযুক্তি, যেমন রাডার জ্যামিং ও অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম প্রয়োগ করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে; নতুন ফাইটার বিমান ও স্থানীয় সংযোজনে তা আরও বিপজ্জনক রূপ নিতে পারে।
কূটনৈতিক ও সামরিক প্রভাব
বিশ্লেষকরা বলেন, রাশিয়া-ইরান ঘনিষ্টতা উভয় পক্ষের স্বার্থের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে—রুশাও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইরানের কামিকাজি ড্রোন ব্যবহার থেকে সুবিধা পেয়েছে বলে অভিমত আছে। একইসঙ্গে, ওই নথি প্রকাশের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে; ইসরায়েল, আমেরিকা ও ক্ষেত্রীয় অন্যান্য ক্ষমতাসমূহ কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেবে তা এখন নজরদারির বিষয়।
প্রকাশিত নথি ও হ্যাকের দাবির সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন কূটনীতিক ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা। রাশিয়া ও ইরানের আনুষ্ঠানিক কণ্ঠপাত এখনও নথির সব বিবৃতিকে স্বীকার করেনি; ফলে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা সতর্কতামূলক ভয়াবহ ফলাফল এড়ানোর জন্য তথ্য যাচাই ও কূটনৈতিক অবস্থানগুলো মনিটর করছেন।,
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.