ইয়াহিয়া খানের মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন গোলাম আযম: আমান আযমী

ডেস্ক রিপোর্ট: জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির প্রয়াত অধ্যাপক গোলাম আযমের ছেলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহিল আমান আযমী জানিয়েছেন, ১৯৬৯ সালে ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা গ্রহণের পর গভর্নর এমএন হুদা বাবাকে মন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ তিনি সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সমালোচনার স্বাধীনতা হারাতে চাননি।

সেদিনের স্মৃতিচারণ করে সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ১৯৭০ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশজুড়ে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছিল, তখন ইয়াহিয়া খান মার্শাল ল’ জারি করে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। সেই সময় গভর্নর মোনায়েম খানকে অপসারণ করে নতুন গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ এমএন হুদাকে।

গোলাম আযমপুত্র বলেন, আমি স্পষ্ট মনে করতে পারি, গভর্নর এমএন হুদা শপথ নেওয়ার একদিন পর আমাদের বাসায় এসেছিলেন। আমাদের বাসা তখন টিনের ছিল, পাশেই চাচার একটি পাকাবাড়ি ছিল। গভর্নর সাহেব চাচার বসার ঘরেই বসেন। চারদিক সাজানো, বেশ আনুষ্ঠানিক পরিবেশ। অনেক মোটরসাইকেলসহ উনি এসেছিলেন, আব্বা তাকে চাচার ড্রইংরুমে রিসিভ করেন।

তিনি আরও বলেন, তখন তো বুঝিনি কী আলোচনা হচ্ছে। পরে জেনেছি, গভর্নর সাহেব আব্বাকে বলেছিলেন-‘আপনি আমার উপদেষ্টা হোন, মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করুন। উপদেষ্টার কোনো আনুষ্ঠানিক পদ না থাকায় আপনি যেকোনো একটি মন্ত্রণালয় গ্রহণ করুন, কিন্তু আমার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করুন’। কিন্তু আব্বা বিনয়ের সঙ্গে সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমি তো রাজনীতি করি দ্বীন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে। সরকার যদি দ্বীনবিরোধী কোনো কাজ করে, আমি তো তার সমালোচনা না করে পারবো না। মন্ত্রী হলে সেটা আর করা যাবে না।’ এমন কথার পর সেদিন গভর্নর এমএন হুদা কিছুটা মুখভার করে চলে গেলেন।

সাবেক এই সামরিক কর্মকর্তা বলেন, ৭০-এর ১২ নভেম্বর এক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের পর যখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তখন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির ছিল। তবে সেটিই ছিল পাকিস্তানের শেষ এবং একমাত্র সুষ্ঠু নির্বাচন, যেটাতে আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। ওই নির্বাচনে বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ে গিয়েছিলাম আব্বার সঙ্গে। মজার ব্যাপার হলো, আমি আব্বার সঙ্গে যেখানেই যেতে চাইতাম তিনি কখনও না করতেন না।

ওই সাক্ষাৎকারে আমান আযমী বলেছেন, ১৯৭০ সালের ১৮ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে জামায়াতের সমাবেশে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমার বাবার ওপর হামলা করে। সেদিন আমি আব্বার পেছনে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আব্বা আমাকে না করে দেন। পরে জানতে পারি, সমাবেশে আব্বাকে আক্রমণ করা হয়েছিল এবং তাকে রক্ষা করতে গিয়ে দুজন শহিদ হন।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্টেডিয়ামের ওপর থেকে রড, লাঠি ও ঢিল নিক্ষেপ করেছিল। তখন আব্বাকে ঘিরে নিয়ে নেতাকর্মীরা নিরাপদে গাড়িতে তুলে বাসায় ফেরত আনেন। এ ঘটনার পরে আব্বা আহত নেতাকর্মীদের নিজ হাতে সেবা করেছেন। আমাদের বাড়ির পাশে একটি টিনের ঘরে অনেক আহত নেতাকর্মী কয়েকদিন পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছিলেন।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার সোহেল রেজা গ্রেফতার

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ও দেশের জনপ্রিয় ক্রীড়া সংগঠন আবাহনীর সাবেক অধিনায়ক সোহেল রেজাকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি নাটোর

পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা, চাচ্ছেন দূতাবাসে আশ্রয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটেছে বাংলাদেশ থেকে। ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও ভয়াবহ বেকায়দায়

নারীর আত্মরক্ষায় ভিন্নধর্মী জুতার উদ্ভাবন নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর 

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: জরুরি অবস্থায় নারীদের সহায়তার জন্য ভিন্নধর্মী জুতার উদ্ভাবন করেছে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নিনাত।‘স্মার্ট জুতা’ নামে উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের নিরাপত্তা

রাউজানে আগুনে পুড়ল তিনটি বসতঘর,পুড়ে ছাই বিয়ের বাজার,স্বর্ণালংকার 

রয়েল দত্ত,রাউজান প্রতিনিধি: ছেলের বিয়ের জন্য ২১ হাজার টাকার বাজার-সদাই করে বাড়ি ফিরেছিলেন রেশমি দে-রতন দে দম্পতি। বাজার থেকে ফিরে দুপুরের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েছিলেন

অসুস্থ হয়ে আদালতের বেঞ্চে শুয়ে পড়লেন বাবুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে আদালতে হাজির করার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এ সময় তিনি আদালতের বেঞ্চে কিছুক্ষণ

হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে ভারতকে হুঁশিয়ারি ড. ইউনূসের

সংবাদের আলো: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকে তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি