
অনলাইন ডেস্ক: ভূমধ্যসাগরে ইতালির লাম্পেদুসা উপকূলে নৌকা ডুবিতে অন্তত ২২ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে শিশু ও নবজাতকও রয়েছে। এ দুর্ঘটনায় প্রায় ৬০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, তবে এখনো অনেকেই নিখোঁজ আছেন।
ইতালির রেড ক্রসের মুখপাত্র জানান, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৬ জন পুরুষ ও চারজন নারী রয়েছেন। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লিবিয়ার জাভিয়া উপকূল থেকে ছেড়ে আসা দুটি নৌকায় মোট কতজন যাত্রী ছিলেন, তা স্পষ্ট নয়।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) মুখপাত্র ফিলিপ্পো উঙ্গারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “লাম্পেদুসা উপকূলে আরেকটি নৌকাডুবিতে গভীর শোক। ইউএনএইচসিআর জীবিতদের সহায়তা করছে।” তিনি জানান, ২০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন।
ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি বলেন, দুর্ঘটনাটি লাম্পেদুসা থেকে ১৪ নটিক্যাল মাইল দূরে ঘটেছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নৌকাটিতে ৯৭ জন ছিলেন। দেশটির সংবাদ সংস্থা আনসা জানায়, প্রথম উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলোর মধ্যে একটি নবজাতক, তিনটি শিশু, দুইজন পুরুষ ও দুইজন নারী ছিলেন।
উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে আনসা জানায়, ত্রিপোলি থেকে ছেড়ে আসা দুটি নৌকার একটিতে পানি ঢুকতে শুরু করলে কিছু যাত্রী অন্য নৌকায় ওঠেন। এতে অতিরিক্ত যাত্রী হওয়ায় দ্বিতীয় নৌকাটিতেও পানি ঢুকে ডুবে যায়।
লাম্পেদুসা অভিবাসী কেন্দ্রের উপপরিচালক ক্রিস্টিনা পালমা জানান, উদ্ধার হওয়া ৬০ জনকে ওই কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইতালির ফাইন্যান্স পুলিশ বাহিনীর একটি বিমান প্রথমে সমুদ্রে ভাসমান অভিবাসীদের দেখতে পায় এবং পরে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়।
বিপজ্জনক মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুটে এ ধরনের দুর্ঘটনা নতুন নয়। ইউএনএইচসিআরের তথ্যমতে, এ বছর এখন পর্যন্ত এই রুটে ৬৭৫ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, বুধবার পর্যন্ত ৩৮ হাজার ২৬৩ জন অভিবাসী দেশটির উপকূলে পৌঁছেছে।
মন্ত্রী পিয়ান্তেদোসি বলেন, এ ঘটনা প্রমাণ করে উৎস দেশ থেকেই বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রা ঠেকানো জরুরি এবং মানবপাচার চক্রকে নির্মূল করতে হবে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সরকার উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তি করেছে, যার আওতায় অর্থায়ন ও প্রশিক্ষণ দিয়ে অভিবাসী যাত্রা রোধে সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে।