নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের সুশীল সমাজের একটি অংশ অত্যন্ত সরব ছিল। তারা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে কন্ঠ মিলিয়ে ছিল, সরকারকে ফেলে দেওয়ার নীল নকশা রচনা করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আন্তর্জাতিক মহল এই সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং নতুন সরকারের সাথে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। ফলে সুশীলরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তারা আবার গর্তে ঢুকে যান।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সুদের আবার তৎপর লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একাধিক বিষয় নিয়ে সুশীলদের তৎপরতা নতুন করে দৃশ্যমান হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে কোটা আন্দোলনের সূত্র ধরে সুশীলরা আবার গর্ত থেকে বেরোতে শুরু করেছেন। যে ইস্যু পাচ্ছেন, সেই ইস্যু নিয়েই তারা সরকারকে চাপে ফেলার জন্য চেষ্টা করছেন।
সুশীল সমাজ যে আবার তৎপর হয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় একাধিক ঘটনায়। সাম্প্রতিক সময়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সুশীল সমাজের উৎসাহের কমতি নেই। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা কোটা আন্দোলনকে সমর্থন করছেন। এমনকি বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপকে তারা স্বাগত জানাচ্ছেন। যে সুশীলরা অতীতে বিচার বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে বা নির্বাহী আদেশ দেওয়াকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণের সামিল হিসেবে অভিহিত করেছিলেন, তারাই এখন কোটা সংস্কারের জন্য ফর্মুলা দিচ্ছেন। ফলে এর মধ্য দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের একটি অংশ উত্তেজিত হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করা হচ্ছে, তাদের সম্পত্তি জব্দ করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এই অভিযানে সন্তুষ্ট। তারা আশান্বিত এবং আনন্দিত। কিন্তু এই দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে ছিদ্র অন্বেষণ করার চেষ্টা করছে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
সাম্প্রতিক সময়ে টিআইবিকে ব্যস্ত দেখা যাচ্ছে।' টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানকে প্রতিদিনই গণমাধ্যমে দুর্নীতি নিয়ে সবক দিতে দেখা যাচ্ছে। অথচ বিপুল পরিমাণ দুর্নীতি, দুর্নীতিবাজ যে বিপুল পরিমাণ সম্পদ জব্দ করা হচ্ছে এ নিয়ে কোন কথা নেই। কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে যখন গতকাল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, কুমিল্লায় বিনা উসকানিতে শিক্ষার্থীরা পুলিশের উপর চড়াও হয়েছে, তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিবৃতি দিয়েছে এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এই বিবৃতি যে সুশীল সমাজের বক্তব্যের অনুরণন, তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
এসময় আবার ড. ইউনূস নতুন করে মাঠে নেমেছেন। ড. ইউনূস এর দুর্নীতি, অর্থ পাচার এবং শ্রমিক ঠকানোর মামলাগুলোকে আটকে দেওয়ার জন্য তিনি আবার আন্তর্জাতিক মহলের দ্বারস্থ হচ্ছেন। বিশেষ করে দুর্নীতি এবং অর্থপাচারের মামলা থেকে বাঁচার জন্য তিনি সবকিছু করতে প্রস্তুত বলেও মনে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তিনি সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার শুরু করার চেষ্টা করছেন।
অর্থাৎ নির্বাচনের আগে যেমন সুশীলরা বিভিন্ন দোকান খুলে, বিভিন্ন সেক্টরে সরকারকে পর্যুদস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন, বর্তমান সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের ছয় মাস পর আবার নতুন করে সেই চেষ্টা শুরু হয়েছে। আর সেই চেষ্টার ক্ষেত্রে সবচেয়ে সামনে আসছে কোটা আন্দোলন। তবে কোটা আন্দোলনটি একটি উপলক্ষ্য মাত্র। ছাত্রদের কাঁধে ভর দিয়ে সুশীলরা দেশে আরেকটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চায়, এমন পরিকল্পনাটি ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে।'
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.