
ডেস্ক রিপোর্ট: জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী ইসলামপন্থীদের জন্য সর্বোচ্চ ছাড় দিতে প্রস্তুত। বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে জামায়াত পূর্বের ঘোষিত যে কোনো আসনের প্রার্থী সরিয়ে নেবে।
শনিবার দুপুরে বগুড়া শহরের ঐতিহাসিক টিটু মিলনায়তনে জেলা ও মহানগর উলামা-মাশায়েখ পরিষদ আয়োজিত বিশাল উলামা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর একটি দল নিজেদেরকে দেশের অঘোষিত মালিক মনে করছে। তারা অপরাধীদের থানা থেকে জোর করে ছাড়িয়ে নিচ্ছে। দেশব্যাপী চাঁদাবাজির মহোৎসব চলছে। অনেক এলাকায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা একটি দলের প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা প্রদর্শন করছেন। এসব দলকানা কর্মকর্তাদের অপসারণ করে নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের সেসব পদে বসাতে হবে। প্রশাসন নিরপেক্ষ না হলে দেশে কোনোভাবেই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। সবার নিকট গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। সরকারকে নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, দেশের মানুষের প্রত্যাশা সকল আলেম-উলামা ঐক্যবদ্ধ হবেন। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৪ বছরেও আলেম সমাজ জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। জুলাই বিপ্লবের পর সেই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অতীতের যেকোনো সময়ের চাইতে বর্তমানে আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ। বৃহত্তর ইসলামী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ইতোম্যেই নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে বৃহত্তর ঐক্য গড়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। ভেতরে ভেতরে সকল ইসলামী দল ও পীর-মাশায়েখগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে দেশের সকল ইসলামপন্থীদের ভোটের বাক্স হবে একটাই।,
উপস্থিত আলেম-উলামাদের উদ্দেশ্য করে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, প্রতিটি মসজিদে জুমআর খুৎবায় ঐক্যের বাণী ছড়িয়ে দিতে হবে। আমাদের মসজিদ হবে দাওয়াতী কাজ এবং ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দু। সামাজিক ঐক্যের মাধ্যমেই আমরা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে চাই।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে হলে ইসলামপন্থীদের বিকল্প নেই। আল্লাহর আইন এবং সৎ মানুষের শাসন ছাড়া কাঙ্খিত শান্তির সমাজ কখনোই সম্ভব নয়। আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ হলে এ দেশে ইসলামের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।,
উলামা মাশায়েখ পরিষদ বগুড়া মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা আলমগীর হুসাইনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ শায়েখ মাওলানা যাইনুল আবেদীন, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. মাওলানা আব্দুস সামাদ, কেন্দ্রীয় উলামা বিভাগের সেক্রেটারি ড. খলিলুর রহমান মাদানী, জামায়াতে ইসলামী বগুড়া অঞ্চলের টিম সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।
আলোচক হিসেবে ছিলেন জামায়াতে ইসলামী বগুড়া জেলা শাখার আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকার, বগুড়া মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আবিদুর রহমান সোহেল, জামিল মাদরাসার মুঈনে মুহতামিম মুফতি মাওলানা আতাউল্লাহ নিজামী, কারবালা মাদরাসার শাইখুল হাদিস মাওলানা কাজী ফজলুল করিম রাজু, ইসলামী আন্দোলন বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আ.ন.ম মামুনুর রশীদ, ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল মতিন, খেলাফত মজলিসের নির্বাহী সভাপতি মুফতি মামুন রহমানী, উলামা মাশায়েখ পরিষদ বগুড়া জেলা সভাপতি মাওলানা মমতাজ উদ্দিন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উলামা মাশায়েখ পরিষদ বগুড়া জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল বাসেত ও মহানগর মহানগর সেক্রেটারি ড. আবু সালেহ মামুন।,