
আফজল খান শিমুল (স্টাফ রিপোর্টার): ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার পৌর শহরের দেবগ্রাম গ্রামের দেবগ্রাম মৌজার ০৪ শতাংশ সরকারি খাস খতিয়ান ভূক্ত জায়গা উদ্ধার করে প্বার্শবর্তী ” মিয়া খাঁ বাড়ির পারিবারিক উন্নয়ন কমিটির” কবরস্থানের সাথে একিভূত করেছে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মো: হাবিবুর রহমান।
এ ব্যাপারে গতকাল ৫ মার্চ রোজ মঙ্গলবার বেলা একটায় উপজেলা ভূমি অফিস থেকে সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শ্রী প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী এর নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলা ভূমি সার্ভেয়ার আমিন, আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের অফিস সহায়ক, মো: মোবারক হোসেন, চেইনম্যান জামসিদ এর নেতৃত্বে একটি দল কাগজপত্র ও ম্যাপ যাচাই- বাছাই করে দেবগ্রাম পূর্ব পাড়া পুরাতন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন পাচশত বছরের ঐতিহ্যবাহী কবরস্থানের পশ্চিম পাশে থাকা সরকারি খাঁস খতিয়ান ভূক্ত ১/১ এর ” ক” অনুচ্ছেদের বিএস ১৪০৬ দাগের মোট ০৪ শতাংশ বাঁশঝাড়সহ অবৈধ দখল উদ্ধার করে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছে উপজেলা ভূমি অফিস।
জানা গেছে, অত্র এলাকার কিছু কু-চক্রি মহল দীর্ঘদিন অবৈধ দখলে রাখে এ জায়গাটি। তারা এখানে সরকারি কোন নিয়ম- কানুনের তোয়াক্কা না করে নিজেদের ইচ্ছামত বাঁশঝাড় লাগিয়ে বিক্রি করে চলেছে অবিরত। বরং আরও শোনা যাচ্ছিল, এ সরকারি জায়গাটি জাল দলিল করে কিছু ভূমি দস্যুর নিকট অবৈধভাবে বিক্রি করার পায়তারা করছিল, এ বিষয়টি শোনার পর সরকারি ভূমি সুরক্ষার জন্য এলাকার কিছু সচেতন ব্যক্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রোজ বুধবার। তারা এ জায়গাটি থেকে অবৈধ দখল উদ্ধার করে প্বার্শবর্তী কবরস্থানের সাথে একিভূত করার আবেদন করেন।
এ ব্যাপারে সরেজমিন তদন্ত করে লোক পাঠিয়ে জেলা প্রশাসক মো: হাবিবুর রহমান সমস্ত কিছু যাচাই- বাছাই করে উক্ত অভিযোগকারীদের জায়গাটি দেখেন যে, এটি সরকারি খাস খতিয়ান ভূক্ত জমি, তাই তিনি কাল বিলম্ব না করে অতি স্বত্তর দখলমুক্ত করার জন্য উপজেলা ভূমি অফিসকে নির্দেশ দেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে, গতকাল অভিযান চালিয়ে আইনি মোতাবেক অনেকদিন দখল করা সরকারি জায়গাটি দখল অবমুক্ত করে উপজেলা ভূমি অফিস ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, দীর্ঘদিন এ জায়গার অবৈধ দখলদার জুনায়েদ আহাম্মেদ খান বলেন, আমরা দীর্ঘদিন সরকারের সাথে মামলা- মোকদ্দমা করে এ জায়গাটি পেয়েছি। স্থানীয় ভাবে সমাধানের জন্য অত্র ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জনাব বাবুল মিয়া আমাকে ফোন দিলে পরিবেশ নাই বলে সরাসরি “না” করে দিয়েছি।
অন্যদিকে প্বার্শবর্তী কবরস্থানের তথা ” মিয়া খাঁ বাড়ির পারিবারিক উন্নয়ন কমিটির ” সভাপতি, জাবেদ উল্লাহ খান বলেন, আমরা অবৈধ ভূমি দস্যুদের বার বার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও এ সরকারি জায়গাটি থেকে সরাতে পারিনি। শুনতে পাচ্ছি, তারা নাকি প্রশাসন কর্তৃক লাগানো সাইনবোর্ডটি তুলে ফেলার হুমকি – ধামকি দিচ্ছে । শেষ পর্যন্ত, তারা রাতের আঁধারে চুরি করে সরকার কর্তৃক লাগানো সাইনবোর্ডটি । এ ব্যাপারে সরকারি ভূমি সুরক্ষার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।
অন্যদিকে, আখাউড়া পৌরসভার ০১ নং প্যানেল মেয়র ও ০৮ নং ওয়ার্ডের (দেবগ্রাম) কাউন্সিলর, বাবুল মিয়া বলেন, আমি গ্রামের মানুষের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, জুনায়েদ খানের সাথে কয়েকবার ফোনে কথা বলেছি, কিন্তু সে এ ব্যাপারে কোন সাড়া দেয়নি। ব্যাপারটি খুবই পীড়াদায়ক।
আখাউড়া উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) শ্রী প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী বলেন, আপনারা যা জেনেছেন আমি তাই জেনেছি এবং ডিসি স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক আইন মেনে কাজ করেছি।