নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি আগামী দিনে সরকার সমর্থিত এই ছাত্র সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রম কীভাবে চলবে-তা নিয়েও তৈরি হয়েছে নানামুখি চ্যালেঞ্জ। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সহিংসতায় জড়ানো এবং পরবর্তীতে শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে বিতাড়নের পর থেকেই এই প্রশ্ন।
সূত্রের তথ্য, কোটা আন্দোলনের শুরুর দিকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ মহল থেকে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে ছাত্রলীগকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হলেও তাতে ব্যর্থ হয়েছে সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। প্রশ্ন উঠেছে তীব্র আন্দোলন চলাকালীন তাদের (ছাত্রলীগ) রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজি নিয়েও। এ নিয়ে দল ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের কাছ থেকে ইতোমধ্যেই তিরস্কার শুনতে হয়েছে শীর্ষ নেতাদের। ক্যাম্পাস নতুনভাবে রাজনীতি করার আগে আত্মসমালোচনার পরামর্শও দিয়েছেন কেউ কেউ। দাবি রয়েছে আন্দোলনকালীন সময়ের ভূমিকা তদন্তেরও। শুধু তাই নয়, কর্মীদের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা না দিয়ে হল থেকে বের হয়ে যাওয়ায় সংগঠনের চার নেতা তথা সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন এবং সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত-কে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী।
সরেজমিন কোটা আন্দোলনকারীদের দমনে মাঠে নামা এক সহ-সভাপতি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সংঘর্ষ চলাকালীন অন্তত তিনবার ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে কর্মীদের সামনে এগিয়ে দিয়ে পেছন থেকে চলে যেতে দেখেছেন তিনি। এর মধ্যে শহীদুল্লাহ্ হল ও মধুর ক্যান্টিন এলাকার ঘটনা দুটি ছিল চোখে পড়ার মত। আর শেষবার মোটর সাইকেলযোগে চম্পট দিয়েছেন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যেও সমালোচনা রয়েছে। তবে প্রকাশ্যে কেউ কথা বলছেন না।
এ নিয়ে নাম প্রকাশ না করা শর্তে শীর্ষ পর্যায়ে কয়েক নেতার সঙ্গে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের কথা হয়েছে। তারা বলেন, তীব্র আন্দোলনকালীন বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই') ২টা পর্যন্ত তারা শীর্ষ নেতাদের থেকে কোনো নির্দেশনা পাননি। কেউ কেউ উল্টো ফোন করে হল ছাড়ার নির্দেশনা পেলেও তা সব পর্যায়ের নেতাকর্মী পর্যন্ত পৌঁছায় শীর্ষ নের্তৃবন্দ। স্বভাবতই সাধারণ শিক্ষার্থীদের হামলার শিকার হতে হয়েছে অনেককে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারধরের শিকার হয়েছেন স্যার এ এফ রহমান, মাস্টারদা' সূর্যসেন হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগ কর্মীরা। বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বিজয় একাত্তর হলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজসহ অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান এবং হলগুলোতে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশনা না পৌঁছায় হামলা-মারধরের শিকার হয়েছেন অনেক নেতাকর্মী।'