
নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ ৪ আগস্ট, অন্যরকম দিনগুলোর চাইতে আজকের দিনটি একটু আলাদা। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলেছে, আজকের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। সারাদিন বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের আকাশ আজ সত্যি মেঘাচ্ছন্ন অনিশ্চয়তার এক ঘোর অন্ধকার আমাদের আচ্ছন্ন করে রেখেছে।
আজ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এই অসহযোগ আন্দোলনের রকমফের কি হবে? এর প্রভাব কি হবে সে নিয়ে জনগণের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক, উৎকণ্ঠা।
গত জুলাই মাস থেকেই মানুষের মধ্যে শান্তি নেই। বহু প্রাণ চলে গেছে। ব্যবসা বাণিজ্য রীতিমতো বন্ধ হয়ে গেছে। দেশের উন্নয়নের স্মারক স্তম্ভ গুলো ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বহু মানুষ কারাগারে আটক রয়েছে। এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে গোটা দেশ জুড়ে।
মানুষ এই অবস্থার অবসান চায়। শিক্ষাঙ্গন গুলোতে শিক্ষা নেই। ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ। অফিস আদালতে কাজ নেই। এক দুঃসময় পার করছি আমরা সকলে। এই দুঃসময় থেকে উত্তরণের পথ কি? এই দুঃসময় থেকে উত্তরণের একটি পথ তা হলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসন।
যে ক্ষতি রাষ্ট্রের এবং প্রতিটি জনগণের হয়েছে তা অপূরণীয়। কিন্তু এই ক্ষত বুকে নিয়েই আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে৷ আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের পারস্পরিক বিশ্বাস আস্থা পুনঃস্থাপন করতে হবে। সরকারকে যেমন তার ভুল ত্রুটিগুলো শুধরে জনগণের কথা শুনতে হবে, তেমনই শিক্ষার্থীদের কাঁধে ভর করে যারা অশুভ শক্তির ষড়যন্ত্র বানচাল করতে চান, তাদেরকেও চিহ্নিত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের বুঝতে হবে দিনের শেষে দেশটা আমার, দেশটা সকলের। আর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যেমন ন্যায্যতা আছে তেমনি তাদের এক দফা দাবি করার কোনো যৌক্তিক ভিত্তি নেই। এটি শিক্ষার্থীদের দাবি হতে পারে না। শিক্ষার্থীরা এই ধরনের দাবি উচ্চারণ করে নিজেদেরকে কারও রাজনৈতিক দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত দেবে কি না সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে শিক্ষার্থীদেরই।
বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের অনেক গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশকে পথ দেখিয়েছে। এবারও শিক্ষার্থীরা সরকারের ঘুম ভাঙিয়েছে। এখান থেকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদেরকেই পথ দেখাতে হবে। এ ধরনের কর্মসূচি কেবল দেশকে আরও বিশৃঙ্খলার দিকে নিয়ে যাবে। দেশকে আরও সহিংস করে তুলবে। এই পরিস্থিতি দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে শুধু ব্যাহত করবে না, মানবিক বিপর্যয় ডেকে আসবে। তাই অনেক হয়েছে। আমাদের এখন সামনের দিকে তাকাতে হবে। সমঝোতা, আলাপ-আলোচনার কোনও বিকল্প নাই। অন্ধকার কাটিয়ে ভোর আমাদের আনতেই হবে।’