নিজস্ব প্রতিবেদক: আনার হত্যাকাণ্ডের পর নজরদারিতে রয়েছেন ১৭ এমপি। এই ১৭ এমপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ তৎপরতা, অন্যায় এবং নানা রকম অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। তাদের গতিবিধি কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আর যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে এবং সরকারকে বিব্রত না হতে হয় সে জন্য এই ধরনের ব্যবস্থা বলে অনেকে ধারণা করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এই সমস্ত সংসদ সদস্যদের ইতোমধ্যে তাদের আচরণ ঠিক করার জন্য, সংযত হওয়ার জন্য ব্যক্তিগতভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষনেতা এ সমস্ত বিতর্কিত এমপিদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদেরকে সতর্ক করেছেন। কিন্তু তারপরও তাদের ব্যাপারে কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে।’
উল্লেখ্য যে, ঝিনাইদহ থেকে নির্বাচিত এমপি আনার ভারতে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। আর তার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। আওয়ামী লীগের কিছু স্থানীয় পর্যায়ের নেতা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্য প্রমাণে জানা গেছে। পাশাপাশি আনারের অন্ধকার জগৎ উন্মোচিত হয়েছে। তার মাদক ব্যবসা, চোরাচালান ব্যবসা সহ অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ড সরকারকে একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছে। আর এই সমস্ত কারণে ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য সরকার সতর্ক। ভবিষ্যতে আনার মতো এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটাতে পারেন বা যাদের আচার আচরণ এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ তাদেরকে ইতোমধ্যেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, এরকম অন্তত ১৭ জন এমপি রয়েছেন যারা গত কয়েক বছরে ফুলেফেঁপে উঠেছেন এবং যাদের অর্থ বিত্তের বৈধ পন্থা অজানা। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মাদক, চোরাচালান সহ নানা রকমের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও এই সমস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি সহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা যেন এখন থেকে সতর্ক হয়ে যান, ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড না করেন সে জন্য যেমন নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে, তেমনি তাদের নিরাপত্তা এবং তারা কী করছে না করছে এই সম্পর্কে নজরদারি রাখা হচ্ছে।’
উল্লেখ্য যে, আওয়ামী লীগের এ রকম বেশ কিছু এমপি রয়েছেন যারা বিতর্কিত, যাদের বিভিন্ন আচার আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু নানা রকম বাস্তবতার কারণে বিশেষত জনপ্রিয়তার কথা বিবেচনা করে তাদের ব্যাপারে কোন কিছু করা হয়নি। কিন্তু আনার হত্যার পর এই বিষয়গুলো নিয়ে এখন সরকার কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। যদি ভবিষ্যতে তারা এসব কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদেরকে গুছিয়ে না ফেলে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে আওয়ামী লীগ- এমন কথাও বলা হচ্ছে। যে ১৭ জন বর্তমান এমপিকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে, তাদের মধ্যে অন্তত চারজন স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত এবং এদের অন্তত একজন আওয়ামী লীগের জোট সঙ্গীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশির ভাগই পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকা থেকে জয়ী হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, এমপিদেরকে বেপোরোয়া হওয়ার লাইন্সেস প্রদান করা হয়নি। কেউ যদি আইনপরিপন্থি কোন অবৈধ তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত থাকে তবে তার দায় দায়িত্ব সরকার নেবে না। এ ধরনের অবৈধ তৎপরতার সাথে যুক্তদেরকে আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করছে বলে জানা গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্মোহ ভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারাই আইন লঙ্ঘন করে অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত হবে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে সরকার এখন শূন্যসহিষ্ণুতা নীতিতে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।’