সুইস ব্যাংকে কেন অরুচি দুর্নীতিবাজদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংকে অর্থপাচার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। সুইস ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, গত দুই বছরে বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংকে টাকা পাঠানোর হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।’

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের জমা করা অর্থ ছিল ৮৭ কোটি ১১ লাখ ফ্রাঁ। ২০২২ সালে শেষে তা কমে দাঁড়ায় ৫ কোটি ফ্রাঁ-তে। আর সেখান থেকে কমে ২০২৩ সালে পৌনে দুই কোটি ফ্রাঁ তে পৌঁছেছে। অর্থাৎ গত দুই বছরে সুইস ব্যাংক থেকে ১১ হাজার কোটি টাকা আমানত সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আমানতের এই টাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোতে গেছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে পাওয়া যাচ্ছে।

প্রশ্ন উঠছে যে, দুর্নীতিবাজরা কেন সুইস ব্যাংক থেকে টাকা সরিয়ে ফেলছে? একটা সময় ছিল সুইস ব্যাংকে টাকা রাখা ছিল মর্যাদার প্রতীক। দুর্নীতিবাজরা সামাজিক মর্যাদা এবং নিরাপদে টাকা রাখার জন্য ব্যাংককে পছন্দ করত। সুইস ব্যাংকের একটা বড় বৈশিষ্ট্য ছিল যে সুইস ব্যাংক অর্থ আমানতকারীর তথ্য প্রকাশ করত না। ফলে এই অর্থের কথা গোপন থাকত। ফলে দুর্নীতিবাজরা এখানে টাকা রাখাটাকে সবচেয়ে নিরাপদ মনে করত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময় সুইজারল্যান্ডের আইনের কিছু পরিবর্তন হয়েছে এবং সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের নীতিমালারও পরিবর্তন হয়েছে। সুইস ব্যাংক এখন তথ্য গোপনের নীতিমালা থেকে কিছুটা সরে এসেছে। এর পিছনে অবশ্য একাধিক কারণ রয়েছে।’

প্রথমত, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোর মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে। এই মালিকানা পরিবর্তনের কারণে তারা এখন অর্থকষ্টে ভুগছে। এ কারণে যে সমস্ত বিতর্কিত ব্যক্তিদের টাকা জমা আছে এই ব্যাংকে তাদের তথ্য তারা ফাস করে দিচ্ছে। ফলে বিতর্কিত ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট দেশগুলো লিখিত অভিযোগ জানাচ্ছে।

দ্বিতীয়ত, এই টাকা অবৈধভাবে উপার্জিত এমন তথ্য এবং অভিযোগ যাচ্ছে সুইস ব্যাংকের কাছে। ফলে ব্যাংক এই টাকাগুলোকে ফ্রিজ করে রাখতে পারছে বা বাজেয়াপ্ত করেছে। এটি সুইজারল্যান্ডের আয়ের একটি বড় উৎস। এরকম বেশ কিছু ব্যক্তি টাকা বাজেয়াপ্ত হয়ে গেছে। ফলে সুইস ব্যাংকে টাকা রাখাটাকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে। তাছাড়া সুইজারল্যান্ড এখন আন্তর্জাতিক মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিষয়ক যে নেটওয়ার্ক তার সদস্য হয়েছে। সেখানে তারা তথ্য আদানপ্রদানের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে সহযোগিতা করছে। এর কারণে সুইস ব্যাংকে যারা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অর্থ রাখছেন তাদের তথ্য সহজেই ফাঁস করে দেওয়া হচ্ছে।’

তৃতীয়ত, সংযুক্ত আরব আমিরাতে টাকা রাখলে মুনাফার হার বেশি। বিনিয়োগ করা যাচ্ছে এবং কেউ প্রশ্ন করছে না। সুইজারল্যান্ডের চেয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে টাকা রাখাটাকে এখন তাই অনেকে নিরাপদ মনে করছেন। সুইজারল্যান্ডে টাকা রাখলে সে টাকা ফেরত পাওয়া যায় না। দুঃসময়ে টাকা পাওয়া যায় না। অতীতে যাদের টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে তাদের অভিজ্ঞতা দুর্নীতিবাজরা এখন সুইজ ব্যাংকের পরিবর্তে দুবাই, সিঙ্গাপুর বা মালয়েশিয়ায় বিনিয়োগ করছেন। আর এ কারণেই সুইস ব্যাংক থেকে ফ্রাঁ এর বিনিয়োগের টাকাগুলো সরাসরি চলে যাচ্ছে এখন সংযুক্ত আরব আমিরাত সহ অন্যান্য দেশগুলোতে।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

হস্তান্তরের আগেই খসে পড়ছে ৯ কোটির থানা ভবনের পলেস্তারা

জেমস আব্দুর রহিম রানা: হস্তান্তরের এখনো ৪-৫ মাস বাকি। অথচ এখনই খসে খসে পড়ছে পলেস্তারা। দেওয়ালে দেখা দিয়েছে ফাটল। এমন চিত্র প্রায় ৯ কোটি টাকা

একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ে, আরেকজনকে অনৈতিক প্রস্তাব’

নিজস্ব প্রতিবেদক: একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির ল্যাব সহকারী রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে। রবিউল ইসলাম জয়পুরহাটের কালাই

আমরা সাহসী জাতি, প্রতিটি রক্তবিন্দুর প্রতিশোধ নেওয়া হবে: পাক প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক: রাজনৈতিক নেতাদের একত্রিত হয়ে পাকিস্তানিদের ‘ঐক্যবদ্ধ জাতি’ হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, আমরা সাহসী জাতি, গত রাতে

ফ্যাসিস্টরা ভারতে বসে বলছে, আমরা নাকি পালিয়ে গেছি

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ফ্যাসিবাদের পতনের পর তা‌দের নেতারা ভারতে ও দুবাই পালি‌য়ে গিয়ে ফুর্তি করছে, আরাম-আয়েশ করছে।

নাইজেরিয়ায় ৫০ জনকে অপহরণ, বেশিরভাগই নারী’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলতি সপ্তাহে উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ায় ৫০ জনকে অপহরণ করেছে দেশটির সন্দেহভাজন ইসলামপন্থী বিদ্রোহীরা। অপহৃতদের বেশিরভাগই নারী। স্থানীয় কর্মকর্তা এবং লোকজন এ তথ্য জানিয়েছেন। বোকো

অনুশোচনা নেই আওয়ামী লীগে

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: বাংলাদেশে গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা হারানোর তিন মাস পরেও নিজেদের কৃতকর্মের বিষয়ে আওয়ামী লীগে কোনো অনুশোচনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বরং পুরো