সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ ও সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ভারি বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে আবারো প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জ। সুরমাসহ সব নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। সপ্তাহের ব্যবধানে আবারো তলিয়েছে জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, সদর, দোয়ারাবাজার ও ছাতকের বিভিন্ন এলাকা। পানিবন্দি লাখো মানুষ৷ সড়ক ডুবে যাওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে তাহিরপুর, মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।’
এদিকে, সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর অতিবৃষ্টিতে ডুবেছে জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ সিলেট নগরীর নদী তীরবর্তী বিভিন্ন ওয়ার্ড। নদ-নদীর পানি বইছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে। পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ।
সিলেটবাসীর এই ভোগান্তি চলতি জুলাইজুড়ে থাকার শঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, জুলাই মাস পুরোটাজুড়েই বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে জুলাই মাসে।
অতিবৃষ্টিতে সিলেট নগরীর উপশহর, তালতলা, মেজরটিলা, বাগবাড়ি, পায়রাসহ বিভিন্ন এলাকার প্রধান সড়ক তলিয়ে হয়েছে। বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় আবারো ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে, পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে খাগড়াছড়ি সদর ও দিঘীনালাসহ নিম্নাঞ্চল। চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। পানিবন্দি হাজারো পরিবার।
দীঘিনালার মেরুং, কবাখালী ও শহরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সড়ক ডুবে বন্ধ হয়ে গেছে রাঙামাটির সাজেক ও লংগদুর সাথে খাগড়াছড়ির যোগাযোগ। মহালছড়ি সড়কের বিভিন্ন জায়গা তলিয়ে যাওয়ায় রাঙ্গামাটির সাথে সড়ক যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। বৃষ্টি চলতে থাকায় পাহাড় ধস ও বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির শঙ্কা রয়েছে। মাটিরাঙার সাপমারায় ভোরে পাহাড় ধসে পড়ে সড়কের ওপর। চার ঘণ্টা পর স্বাভাবিক হয় সড়ক যোগাযোগ। শহরের শালবাগান, হরিনাথপাড়া, রসুলপুর ও মেহেদিবাগে পাহাড় ধসে কয়েকটি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ফেনীর মুহুরি নদীর বাধ ভেঙে বন্যা দেখা দিয়েছে। ফুলগাজীতে বন্যার পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে ডুবে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আকস্মিক বন্যার কারণে স্থগিত করা হয় ফুলগাজী ও পরশুরামে মঙ্গলবারের এইচএসসি পরীক্ষা।
এদিকে কুড়িগ্রামে সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ফলে কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনিত ঘটেছে। বুধবার (৩ জুলাই) স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড সকাল ৯টায় জানায়, ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, ব্রহ্মপুত্র নদের নুনখাওয়া পয়েন্টে ৪৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং চিলমারী পয়েন্টে ৩৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া শেরপুরের শহর রক্ষা বাধ ভেঙে শহরসহ শেরপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’