নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ নিজেদের গণধিকৃত দলে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে তারা কি জিনিস তা জনগণ বুঝতে পেরেছে। তাদেরকে জনগণ চায় কিনা সেটা শহীদ, আহত ও তাদের পরিবারকে জিজ্ঞেস করলেই বুঝা যাবে। পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি কখনো আনসার লীগ, কখনো রিকশালীগ, কখনো চাকুরী লীগ আবার কখনো ইসকন লীগ রূপে ফিরে এসে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল। কিন্তু দেশপ্রেমিক জনগণ ধর্ম-বর্ণ, দলমত নির্বিশেষ আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেছে।’
দেড়যুগ পর শুক্রবার সিলেটে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জেলা কর্মী সম্মেলনে এসব কথা বলেন জামায়াতের আমির।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, সহকারী সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম ও মাওলানা মাশুক আহমদের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ফজলুর রহমান, মহানগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম প্রমুখ।’
দীর্ঘদিন পর প্রকাশ্যে জামায়াতের সম্মেলনকে ঘিরে সকাল থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জমায়েত হন। তাদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা গেছে। জুম্মার নামাজের আগেই শেষ হয় সম্মেলন।
ডা. শফিক তার বক্তব্যে আরও বলেন, জামায়াত কোনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করেনি, কেবলই আল্লাহর কাছে মাথা নত করেছে। যার ফলাফল ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্টের পতন।
তিনি বলেন, ২০০৬ সালে লগি-বৈঠার তাণ্ডবের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বর্বর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। দীর্ঘ ১৬ বছরে তারা ইতিহাসের বর্বর ও আগ্রাসী শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে গণধিকৃত একটি দলে পরিণত হয়েছে।’
১৬টি বছর তার দল অনেক ত্যাগ শিকার করেছে উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, আমরা আরও ত্যাগ শিকারে প্রস্তুত আছি। সেই ত্যাগের বিনিময়ে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সাম্যের বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই। আওয়ামী লীগ আমাদের শীর্ষ ১১ নেতৃবৃন্দের কাউকে ফাঁসি দিয়েছে ও কাউকে হত্যা করেছে। জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধেও ফাঁসির রায় দিয়েছে।’
সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা বার বার বলেছি-এদেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরুর নামে আর কোনো বিভক্তি চাই না। এর প্রতিফলন বিশ্ববাসী দেখতে পেয়েছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্র বিভক্তির বদলে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করেছে।
সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ জেলা আমির মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান, মৌলভীবাজার জেলা আমির ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলী, সিলেট জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক আব্দুল হান্নান ও হাফেজ আনওয়ার হোসাইন খান, হবিগঞ্জ জেলা জামায়াত নেতা মহসিন আহমদ, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ, উপাধ্যক্ষ সৈয়দ ফয়জুল্লাহ বাহার, মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি শরীফ মাহমুদ, শাবি ছাত্রশিবির সভাপতি তারেক মনোয়ার, জেলা পশ্চিম ছাত্রশিবির সভাপতি মারুফ আহমদ প্রমুখ। এর আগে সকালে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে ওয়ার্ড সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য জামায়াতের আমির।’