সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জে জমি লিখে না দেওয়ায় মা-বোনকে মারপিট করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে ছেলে মো. হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে। মারপিটের ঘটনায় আহত আনোয়ারা খাতুন ওরফে শিল্পী (৩৮) সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী হাজেরা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
শনিবার (৩১ আগষ্ট’) সদর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ন কবির অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মারপিটের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার সয়াধানগড়া উত্তর পাড়া গ্রামের এ ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকার সয়াধানগড়া উত্তর পাড়া গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেন জীবিত থাকা অবস্থায় আনোয়ারা খাতুন ওরফে শিল্পীকে দুই শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। তার কিছুদিন পর আনোয়ার হোসেনের মৃত্যু হয়। পরে ওই জমিতে ঘর তুলে শিল্পী বেগম ও তার মা হাজেরা বেগমকে সাথে নিয়ে বসবাস করে আসছে। আনোয়ার হোসেনের নামে বাড়ীর অবশিষ্ট ৬ শতাংশ জায়গা থাকায় হাফিজুর রহমান তার বোন শিল্পীকে ওই জায়গা ও ঘরবাড়ী উচ্ছেদ করার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালায়। শিল্পীর বসবাসরত ঘর যেকোন সময় ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য মাঝে মধ্যেই হুমকি দিতে থাকে তার ভাই।
মা হাজেরা বেগম বলেন, হাফিজুর রহমান বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ীতে এসে শিল্পীর বাড়ীঘর জোর পূর্বক ভেঙ্গে ফেলবে এমন হুমকি দিয়ে চলে যায়। এই কাজে কেউ বাঁধা দিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যায়। এছাড়াও আমাকে ও আমার মেয়ে শিল্পীকে মারপিট মারপিট করে আহত করে।
তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে আমি এলাকার মাতব্বরদের অবগত করেছি। তারা হাফিজুর রহমানকে অনেক ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু হাফিজুর রহমান কাউকে মানে না। আমরা এখন নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। টাকার জন্য সে সব কিছু করতে পারে। মেয়ে শিল্পীর কাছ থেকে টাকা নিতে না পেরে ঘরের দরজা লাগিয়ে আমাকে ও তাকে বেধড়কভাবে মারপিট করেছে। আমাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। এমন কুলাঙ্গার সন্তান আমার দরকার নেই। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমাকে ও আমার মেয়েকে মারপিটের সঠিক শাস্তি চেয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
আহত আনোয়ার খাতুন ওরফে শিল্পী বলেন, ভাই হাফিজুর দীর্ঘদিন ধরে জুয়ায় আসক্ত। বাবা ২ শতক জমি লিখে দেওয়ার পর থেকেই জুয়া খেলার জন্য মাঝে মধ্যে টাকা নিতো। বেশি টাকা দিতে না পারায় শেষ পর্যায়ে বাড়ী থেকে চলে যেতে বলে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী আমাকে মারপিট করে আহত করে চলে যায়। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে এসে এখন মোটামুটি সুস্থ আছি। তবে মাথা ও মুখে বেশি আঘাত পাওয়ায় খুব কষ্ট হচ্ছে।
এ বিষয়ে হাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ২৫০ শয্যা বঙ্গমাতা ফজিলাতুনেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ফয়সাল আহমেদ জানান, হাজেরা বেগম প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে। এবয় শিল্পী খাতুন নামে একজন ভর্তি আছে। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ন কবির বলেন, জমির জন্য মা-বোনকে মারপিটের বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’