নিজস্ব প্রতিবেদক: সংরক্ষিত আসনের নারী এমপি কারা হবেন-এ নিয়ে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। এখন পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়নি। কিন্তু নারী আসনে সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য আগ্রহীদের দৌড় ঝাঁপ দৃশ্যমান হয়ে গেছে। ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে, ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে এবং বিভিন্ন নেতাদের বাসা বাড়িতে নারী সংসদ সদস্য হতে আগ্রহীদের দৌড় ঝাঁপ এখন লক্ষ্যণীয়। তারা কেউ চেষ্টার ত্রুটি করছেন না।
শুধুমাত্র রাজনীতিবিদরাই যে নারী আসনে সংসদ সদস্য হতে আগ্রহী-এমনটি নন। বরং নারী আসনে রাজনীতির বাইরে যারা বিভিন্ন পেশায় আছেন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আছেন তারাও নারী সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য তাদেরকে ব্যাপক আগ্রহী দেখা যাচ্ছে। নারী সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে বেশি চেষ্টা তদবির করছেন এখন রাজনীতিবিদরা, বিভিন্ন নারী নেত্রীরা। যারা বিভিন্ন সময় আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু কোনো পদ পদবি এখন পর্যন্ত পাননি এই ধরনের নারী নেত্রীরাই সবচেয়ে বেশি আগ্রহী।
গত নির্বাচনে যারা মনোনয়ন পেয়েছিলেন কিন্তু মনোনয়ন পাওয়ার পর তাদেরকে মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয়েছে জাতীয় পার্টি এবং শরিকদের সাথে আসন সমঝোতার জন্য-এরকম নারী নেত্রীরা মনোনয়ন প্রাপ্তির দৌড়ে এগিয়ে আছেন। যেমন, গাইবান্ধা থেকে মাহাবুব আরা গিনি তিনি নারী সংসদ সদস্য হিসাবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
জামালপুর থেকে মনোনয়ন চেয়েও মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মারুফা আক্তার পপিও মনোনয়ন লড়াইয়ে আছেন। তবে মনোনয়ন না পাওয়ার পর আওয়ামী লীগের একজন জনপ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটূক্তির অপরাধে পর্যন্ত তিনি মনোনয়ন পাবেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। একইভাবে মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়া তারানা হালিমও এবার নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে পারেন। তবে তারানা হালিম এর আগেও নারী সংসদ সদস্য হিসেবে জাতীয় সংসদে ছিলেন। একজন নারীকে দু বার সংরক্ষিত কোটায় সংসদ সদস্য করা হবে কিনা এটিও আওয়ামী লীগ সভাপতির সিদ্ধান্তের বিষয় বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নীতি নির্ধারকরা জানিয়েছেন।
এছাড়াও যারা নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি বা পরাজিত হয়েছেন এ রকম নারী নেত্রীরাও মনোনয়ন প্রত্যাশী। খুলনা থেকে মনোনয়ন না পাওয়া মন্নুজান সুফিয়ান এবার নারী আসনের জন্য চেষ্টা করবেন। একইভাবে গাজীপুর থেকে পরাজিত মেহের আফরোজ চুমকি, ঢাকা-৪ থেকে পরাজিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী সানজিদা খানম, মানিকগঞ্জ থেকে পরাজিত সংগীতশিল্পী মমতাজ সহ একাধিক নারী নেত্রী মনোনয়ন লাভের জন্য চেষ্টা তদবির তৈরি করছেন।
তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, যারা নির্বাচনে দাঁড়িয়ে পরাজিত হয়েছেন তাদের নারী সংসদ সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। তবে যারা মনোনয়ন চেয়ে পাননি এমন নারী নেত্রীদেরকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করতে পারেন।’
রাজনীতিবিদদের পরই সবচেয়ে বেশি উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে সংস্কৃতি অঙ্গনের ব্যক্তিত্বদের মধ্যে। একশোরও বেশি শোবিজের তারকারা এবার সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য মাঠে নেমেছেন। এদের মধ্যে যারা আলোচিত রয়েছেন তারা হলেন তারিন জাহান, নুসরাত ইমরোজ তিশা ও চিত্রনায়িকা মৌসুমী, চলচিত্র সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ সহ আরও অনেকে। এরা তাদের যোগ্যতা প্রমাণের জন্য বিভিন্ন মহলের তাদের অবদানের কথা বলে বেড়াচ্ছেন। এছাড়াও টেলিভিশন জগতে কাজ করা তানভীন সুইটি সহ বিভিন্ন তারকারাও নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য চেষ্টা করছেন।’
সংস্কৃতি জগত ছাড়াও চিকিৎসক, বুদ্ধিজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষকরাও নির্বাচনে মনোনয়ন লাভের জন্য আগ্রহী। তাদের তালিকাও কম নয়। হিসেবে নিকেশ করে দেখা গেছে সহশ্রাধিক নারী এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য চেষ্টা করবে। আওয়ামী লীগ তার দলীয় কোটা থেকে ৩৮ জনকে নির্বাচনে মনোনয়ন দিতে পারবে। এবং ১১ টি আসন স্বতন্ত্রদের হাতে রয়েছে। সেটিও আওয়ামী লীগই নিয়ন্ত্রণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৪৭ টি আসনের জন্য সহশ্রাধিক নারী এখন মাঠে নেমেছেনে।’