নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আবাসিকে গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। শীতে গ্যাস সংকট নিরসনে তিতাস কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে। ফলে আসছে শীতেও গ্যাস সংকট ভোগাবে নগরবাসীকে।
শুধু রান্নার চুলা নয়, গাস সংকট চলছে সিএনজি পাম্পেও। গ্যাসের জন্য পাম্পগুলোতে দেখা দিয়েছে বিশাল লাইন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে যাচ্ছে সেখানে। রাস্তা জুড়ে যানবাহনের এই লাইনের কারণে পুরো নগর জুড়ে দেখা দিয়েছে অসহনীয় যানজট।
রাজধানীবাসীর অভিযোগ, তারা চাহিদা মতো গ্যাস পাচ্ছেন না। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো কোনো এলাকায় একেবারেই গ্যাস থাকছে না। যেটুকু পাওয়া যায় তা দিয়ে রান্না করা সম্ভব হয় না। বিকালে বা রাতে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে এ সময় গ্যাস তেমন কাজে লাগছে না।
ফলে তাদের বাধ্য হয়ে এলপিজি গ্যাস ব্যবহার করতে হচ্ছে নতুবা বাইরের খাবার কিনে খেতে হচ্ছে। একদিকে প্রতি মাসে নির্ধারিত গ্যাস বিল দিতে হচ্ছে। অন্যদিকে এলপিজি গ্যাস কিনতেও অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে’। এতে মাসিক খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
রাজধানীতে গ্যাস সরবরাহ কোম্পানি তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলছে, সরবরাহের চেয়ে গ্যাসের চাহিদা বেশি। এ ছাড়া নতুন করে একটি সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ এলাকার কিছু কিছু জায়গায় গ্যাসের চাপ কম থাকছে’। দিনে তাদের গ্যাসের চাহিদা ১৮০ থেকে ১৯০ এমএমসিএফডি। সাধারণত ১৭০ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করা হলে কোনো ঘাটতি থাকে না। ঘোড়াশালে নতুন সার কারখানায় দৈনিক ৪০ থেকে ৬০ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করায় পাইপলাইনে গ্যাসের চাপ কমে গেছে। এতে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া সপ্তাহের একাধিক দিন উন্নয়ন কাজ করায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় গ্যাস থাকছে না, আশপাশের এলাকায় গ্যাসের চাপ কম থাকে।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। একসময় সর্বোচ্চ ৩২০ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়েছে। এখন দৈনিক সরবরাহ করা হয় ২১শ’ থেকে ২৩শ’ কোটি ঘনফুট। গত সোমবার সরবরাহ করা হয়েছে ২ হাজার ২৪০ কোটি ঘনফুট। আর ননগ্রিডে সরবরাহ করা হয়েছে ৮৬ কোটি ঘনফুট গ্যাস।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সরকার স্থানীয়ভাবে গ্যাসের চাহিদা না বাড়িয়ে এলএনজি আমদানির দিকে দৌড়াচ্ছে বেশি। এ কারণে গ্যাসের জন্য রাখা বাজেটের বেশিরভাগ টাকা ওই খাতে চলে যাচ্ছে। আরও তিনগুণ এলএনজি আমদানি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২৬ সালের পর এলএনজি আমদানি ১০.৫০ মিলিয়ন টন পার ইয়ার (এমটিপিএ) ছাড়ানোর ব্যবস্থা চূড়ান্ত হয়ে আছে।