নিজস্ব প্রতিবেদক: হঠাৎ করেই আবির্ভূত হয়েছেন, হঠাৎ করেই মিলিয়ে গেছেন। রাজনীতিতে এসেছিলেন, আলোচিত হয়েছিলেন তাদের সম্ভাবনার কথাও শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু রাজনীতিতে তারা শেষ পর্যন্ত টিকতে পারেননি। হঠাৎ আলোর ঝলকানির মতই এই রাজনীতি থেকে তাদের বিদায় হয়েছে এবং এই বিদায়ের কারণ কি, এই বিদায়ের কারণ তারা নিজেরাই। তাদের ভুল রাজনীতি এবং ভুল কৌশলের কারণেই তারা রাজনীতির মূল ধারা থেকে ছিটকে চলে গেছে।’
এরকম কয়েকজনের মধ্যে রয়েছেন…
ইমরান এইচ সরকার
ইমরান এইচ সরকার আলোচনায় আসেন গণজাগরণ মঞ্চের মাধ্যমে। ৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা। বিশেষ করে, কাদের মোল্লার ফাঁসি না হওয়ার প্রতিবাদে গণজাগরণ মঞ্চ সৃষ্টি হয়েছিল। গণজাগরণ মঞ্চের মাধ্যমে ইমরান এইচ সরকার একজন জাতীয় নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং তিনি নিজের বাস্তবতা ও নিজের অবস্থান না বুঝেই মোটামুটি একজন জাতীয় নেতার মতো আচরণ শুরু করেছিলেন। তার কথায় পুরো দেশ চলবে এমন একটি ভাবনাও তার মধ্যে তৈরি হয়েছিল। সেই সময় তরুণরা গণজাগরণ মঞ্চে আকৃষ্ট হয়েছিল এবং তরুণদের আকর্ষণের কারণেই এই সরকার একজন বিশাল জাতীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে জাহির হয়েছিলেন।
কিন্তু অল্প কিছুদিনের মধ্যেই গণজাগরণ মঞ্চ বিতর্কিত হয়। হেফাজতের তাণ্ডবের পর সরকার গণজাগরণ মঞ্চ থেকে তাদের হাত তুলে ফেলে। ফলে গণজাগরণ মঞ্চ অপ্রান্তীয় হয়ে যায়। সংগঠনটির মধ্যেও দেখা দেয় নানারকম বিভক্তি। এক পর্যায়ে ইমরান এইচ সরকার হারিয়ে যান। এখন ইমরান এইচ সরকারের কোনও খবর নেই। তিনি মাঝখানে একবার নির্বাচন করেছিলেন তার নিজ পৈত্রিক নিবাস থেকে। সেখানে তিনি তার জামানত হারিয়ে এখন অস্তিত্বহীন। তাকে নিয়ে তেমন কোনও আলোচনা, সমালোচনা কোনও মহল থেকে হয় না। রাজনীতিতে তিনি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির মতো হারিয়ে যাওয়া একটি নাম।
রেজা কিবরিয়া
রেজা কিবরিয়াও রাজনীতিতে আলোচিত হয়েছিলেন। তাকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনাও হয়েছিল বিভিন্ন সময়ে। বিশেষ করে, আওয়ামী লীগ বিরোধী আন্দোলনের সময় রেজা কিবরিয়া ভবিষ্যতে একটা বড় কিছু করে দেখাতে পারেন এবং তার নেতৃত্বে একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক মেরুকরণ ঘটতে পারে বলে অনেকে ধারণা করেছিল। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণে অনেকে মনে করেছিলেন যে তিনি এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দের ব্যক্তি হিসেবে পাদপ্রদীপে আসবেন।
কিন্তু রেজা কিবরিয়া যে রাজনীতিতে অপদার্থ এবং অযোগ্য তা তিনি নিজেই প্রমাণ করতে বেশি সময় নেননি। এখন তিনি রাজনীতিতে নেই। রাজনীতিতে অপাংতেয় এবং অনাহত এবং হিসেবেই পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়েছেন।
শওকত মাহমুদ
শওকত মাহমুদ একদা মেধাবী এবং প্রভাবশালী সাংবাদিক ছিলেন। দৈনিক সংবাদের মাধ্যমে তিনি আলোচনায় আসেন। একসময় তিনি বিএনপির রাজনীতিতে সরাসরি যুক্ত হন এবং বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে একাধিকবার তিনি সাধারণ সম্পাদক সভাপতি হয়েছেন। কিন্তু রাজনীতিতে এসে তিনি নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি। নানারকম ভুল এবং বিভ্রান্তির মধ্যে হাবুডুবু খেয়ে অবশেষে তিনি রাজনীতিতে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছেন। এবার নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন। রাজনীতিতে তিনি একজন পরগাছা হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছেন।’