ইয়াহিয়া খান, এনায়েতপুর সংবাদদাতা: সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি দ্রুত গতিতে বাড়ছে। সে সঙ্গে নদী তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে শাহজাদপুর উপজেলায় শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আর গত এক মাসে ৩শতাধিক বসতভিটা গিলে খেয়েছে যমুনা।
এদিকে গত দুদিন ধরে যমুনার পানি আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে প্লাবিত হচ্ছে ব্রাহ্মণগ্রাম, আরকান্দি, জালালপুর, হাটপাচিল সহ আরো বেশ কয়েকটি গ্রাম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যমুনায় পানি বাড়ার সাথে সাথে শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর এবং কৈজুরী ইউনিয়নে গত এক সপ্তাহ ধরে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিওব্যাগ ফেললেও বর্ষা মৌসুমে সেটা কোনো কাজেই আসছে না।
যমুনার পানি বাড়ার কারণে ভাঙনের তীব্রতা আরও বেড়েছে। ভাঙন শুরু হয়েছে। গত তিনদিনের ব্যবধানে এ দুটি ইউনিয়নে অন্তত ৪০-৫০টি বাড়িঘর বিলীন হয়েছে।
জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ বলেন, বছরের পর বছর ধরে এ অঞ্চলে ভাঙন চলে আসছে, মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। ভাঙনরোধে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প দিলেও তিন বছরে ৫০ ভাগ কাজও শেষ হয়নি। ফলে কিছুতেই ভাঙনমুক্ত হচ্ছে না এ অঞ্চলবাসী।
ব্রাহ্মণগ্রামের মিলন সরকার ও জালালপুর গ্রামের তাজু কামরুল বলেন, আমাদের এলাকাবাসী কোনো ত্রাণ চান না। তারা চায় দ্রুত নদী ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। পানি উন্নয়ন বোর্ড বর্ষা কালে কাজ শুরু করে। তারা যদি শুষ্ক মৌসুমে কাজ করতো তাহলে এমন পরিস্থিতি আমাদের দেখতে হতো না।
এদিকে পাউবো সূত্র জানায়, ২০২১ সালে যমুনার ভাঙনরোধে শাহজাদপুরের এনায়েতপুর থেকে কৈজুরী পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার নদী তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৬৪৭ কোটি টাকার এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও মাত্র অর্ধেক শেষ হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ জুন পর্যন্ত বাড়োনো হয়েছে।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান বলেন, জালালপুর ও কৈজুরী ইউনিয়নের হাঁটপাচিল এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। কয়েকদিন আগে ভাঙন কমেছিলো পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। দুটি এলাকায় তিনদিনে অন্তত ৪৫ থেকে ৫০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন কবলিতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের সহযোগিতা করা হবে।