নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবি জানিয়ে সপ্তম দিনের মতো আন্দোলন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি’) শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে প্রায় তিন ঘন্টাব্যাপী তারা আন্দোলন করেন।
আন্দোলনের মাঠে গুটি-গুটি পায়ে হেটে বেড়াতে দেখা যায় ছোট এক শিশুকে। যার পরনে ছিলো নীল রঙের গেঞ্জি। পিঠে লেখা ছিলো ‘এক দফা এক দাবি, কোটা প্রথা কবে যাবি’। ঠিক তার পাশেই রয়েছেন তার সংগ্রামী মা। যিনি অংশ নিয়েছেন কোটা সংষ্কার আন্দোলনে। নিজের শিশু সন্তানও আগামীতে এভাবে তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্ব দিবে বলে প্রত্যাশা মায়ের। আর তাইতো জাতির বিবেককে জাগ্রত করতে পেটের সন্তানকেও শামিল করিয়েছেন আন্দোলনের মাঠে।
বৃহস্পতিবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত কোটা সংষ্কার আন্দোলনে শিশুসন্তানসহ যোগ দেওয়া ওই নারী শিক্ষার্থী ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। তিনি জানান, বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থার প্রতিবাদ স্বরূপ আমার সন্তানকে নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি। সন্তানও বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের স্বচক্ষে দেখুক। তরুণ প্রজন্ম যে বৈষম্যের মধ্যে পড়ে আছে, আমি সেই বৈষম্যের দ্রুত অবসান চাই। একজন নারী হয়েই বলছি, নারী কোটার কোন প্রয়োজন নেই। কেননা নারীরাও সবদিক দিয়ে পুরুষের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে। মেধার সঠিক মূল্যায়নই ন্যায়বিচার বলে মনে করি।’
এদিকে কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবন সংলগ্ন বটতলায় সমবেত হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল শেষে কুষ্টিয়া খুলনা-মহাসড়ক অবরোধ করেন। প্রায় ২০ মিনিট মহাসড়কে অবস্থান শেষে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক সংলগ্ন মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। সেখানে বিভিন্ন প্রতিবাদী গান, নাটিকা ও কবিতা আবৃত্তি করতে দেখা যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের।
কোটা আন্দোলন ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া কোটা আন্দোলন চলাকালীন বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।’
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, যে বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য দেশকে স্বাধীন করা হয়েছিল, সেই বৈষম্য যেন আর না থাকে তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমেছে। চাকরী পরীক্ষা ও ভর্তি পরীক্ষাসহ সবখানে কোটার ছড়াছড়ি। এর মাধ্যমে মেধাবীদের বঞ্ছিত করা হচ্ছে। সংবিধানে বলা আছে কোটা থাকবে শুধু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য। এটা নিয়ে আমরা স্থায়ী সমাধান চাচ্ছি। সুনির্দিষ্ট কমিশন গঠন করে কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার করা হোক সেটাই আমাদের চাওয়া।’