
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী আগামী ২১ জুন দু’দিনের সফরে ভারত যাচ্ছেন। ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী নানা রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। ২৯ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট পাশ করা হবে। ৩০ জুন পাস হবে অর্থবিল। সবকিছু মিলিয়ে গোটা জুন মাস জুড়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টানা ব্যস্ততা, দম ফেলার সময় নেই তার। আর এই বাজেট অধিবেশনের পরপরই মন্ত্রিসভার রদবদল হতে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে যে, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভা বড় করার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি প্রাথমিক আলাপ আলোচনা শুরু করেছেন। মন্ত্রিসভার এই রদবদলে এবারও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন রয়েছে’।
তবে আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন যে, মন্ত্রিসভার রদবদলের বিষয়টি তিনিও শুনেছেন। তবে এটি প্রধানমন্ত্রীর একক এখতিয়ার। তিনি কখন কীভাবে মন্ত্রিসভা রদবদল করবেন তা একান্তই তার সিদ্ধান্ত। কিন্তু মন্ত্রিসভার রদবদলের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে নানা রকম আলাপ আলোচনা এবং উত্তেজনা এখন দৃশ্যমান।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মহল থেকে প্রাপ্ত তথ্য জানা গেছে যে, যারা রাজনীতিবিদ আছেন, এরকম বেশ কয়েকজনকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের দুজন সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এবং এস এম কামাল হোসেন মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলে বিভিন্ন মহলে আলাপ আলোচনা রয়েছে।এছাড়াও আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে বলে আলোচনা আছে। এর বাইরেও দু একজনের নাম শোনা যাচ্ছে, যারা নতুন মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।’
নতুন মন্ত্রিসভায় আমলাদের মধ্যে থেকে অন্তত একজনের অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন যে, এ সমস্ত নেতাকর্মীদের আকাঙ্খা। শেখ হাসিনা কী করবেন সেটি সম্পর্কে সকলেই অন্ধকারে রয়েছেন। সংবিধান অনুযায়ী এটি প্রধানমন্ত্রীর একক এখতিয়ার।
মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের পাশাপাশি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দপ্তর বণ্টন নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। একাধিক মন্ত্রী ধারণা করছেন যে, সামনে যে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হবে সেখানে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর দপ্তর পরিবর্তন হতে পারে। বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী আসতে যাচ্ছেন এটা মোটামুটি নিশ্চিত। তবে কে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য মন্ত্রী হবেন- এ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারেননি।
অন্যদিকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত পূর্ণমন্ত্রী হচ্ছেন-এটা মোটামুটি নিশ্চিত বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তবে মোহাম্মদ আলী আরাফাত পূর্ণমন্ত্রী হলে তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে থাকবেন নাকি অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে যাবেন সেটি নিয়েও বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে।
বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথা বলে যে ধারণা পাওয়া গেছে, তাতে একাধিক রকমের সম্ভাবনার কথা তারা বলছেন। কেউ কেউ মনে করছেন যে, বর্তমান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। আর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আসতে পারেন বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন মোহাম্মদ আলী আরাফাত।’
আবার কারও কারও মতে ড. হাছান মাহমুদ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তিনি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছেন স্বল্প সময়ে। এ কারণে তার চটজলদি অন্য মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তিনি একই মন্ত্রণালয়ে থাকবেন। তবে সেখানে ড. সেলিম মাহমুদকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। মোহাম্মদ আলী আরাফাত পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে থাকতে পারেন বলে কেউ কেউ বলছেন।
অন্যদিকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণমন্ত্রীকে দেওয়া হতে পারে। বর্তমান পরিকল্পনা মন্ত্রী শারীরিক ভাবে বেশ অসুস্থ। তিনি দপ্তরবিহীন মন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে পারেন বলেও বিভিন্ন মহল থেকে শোনা যাচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী দেওয়া হতে পারে বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা রয়েছে। অথবা রাজনৈতিক কোন নেতাকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে দেওয়া হতে পারে বলেও গুঞ্জন রয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভার রদবদল কীভাবে হয় সেটি বুঝতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।’