ভারত কেন চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজী না

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২১ জুন দিল্লি সফরে যাচ্ছেন। টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি হবে তার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সরকারি সফর। ভারত সফরে তিনি তিস্তার পানি চুক্তি, অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন সহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, নরেন্দ্র মোদি টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এটি কোন প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ভারত সফর। আর এই সফরকে ভারত সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, নেইবর ফাস্ট।’ নরেন্দ্র মোদির এই নীতির অংশ হিসেবেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ভারত সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’

এই সফর নানা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু ভারত সফরই করছেন না। আগামী ২১ জুন দুইদিনের ভারত সফরের পর তিনি আগামী ৯ জুলাই চীন সফর করবেন এবং চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ এবং নানা রকম বাণিজ্যিক বিষয় নিয়ে সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেওয়া হবে। যদিও চীন এবং ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েন দীর্ঘদিনের এবং দুটি দেশ এখন পরস্পরের শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে, তবুও বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের অতিরিক্ত মাখামাখি নিয়ে ভারত মোটেও বিব্রত নয়, বিরক্ত নয়। বরং ভারতের কূটনৈতিক মহল বাংলাদেশ-চীনের সম্পর্ককে পাশ কাটিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে। এটি বিশ্ব কূটনীতিতেও একটি বিরল ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।

এটি কেন সম্ভব হচ্ছে’? এর ব্যাখ্যা হিসেবে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা একাধিক কারণ খুঁজে পেয়েছেন। প্রথমত, শেখ হাসিনার দূরদর্শী। নেতৃত্ব শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই তিনি ভারত এবং চীনের মধ্যে একটি বড় ভারসাম্য রক্ষা করতে পেরেছেন। শেখ হাসিনার কূটনীতির একটি বড় দিক হল বিশ্বস্ততা। তিনি যে কথা দেন সে কথা তিনি রাখেন। তিনি বাংলাদেশকে কারও ক্ষতি করার জন্য ব্যবহার করতে দেন না। তিনি বাংলাদেশে সুনির্দিষ্ট পররাষ্ট্র নীতি অর্থাৎ ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’এটি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন। তিনি যেমন বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ককে ভারত বিরোধিতার জন্য ব্যবহৃত হতে দেন না, তেমনি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে যেন চীন বিরোধী প্রপাগান্ডা পরিণত না হয় সে জন্য সতর্ক থাকেন। আর এ কারণেই এই সম্পর্কগুলোকে সকলেই ইতিবাচকভাবে লক্ষ্য করে। কারও জন্যই ক্ষতিকারক নয় বাংলাদেশ-এই ধারণাটি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন শেখ হাসিনা।

দ্বিতীয়ত, ভারতের বাংলাদেশকে অত্যন্ত দরকার এবং বাংলাদেশ ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর গত ১৫ বছর ভারত লাভবান হয়েছে সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন করা, বাংলাদেশে তাদেরকে জায়গা না দেওয়া, ভারতের জন্য ট্রানজিট সুবিধা দেওয়া এবং অবাধ বাণিজ্য সহ বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে তাতে ভারত উপকৃত হয়েছে। এর ফলে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন প্রায় দমন হয়ে গেছে। ভারতের হাজার হাজার কোটি রুপি বেচেছে। এ কারণে ভারত শেখ হাসিনার কোন বিকল্প দেখছে না বা দেখতেও চায় না।

তৃতীয়ত, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই।’ ভারত সুস্পষ্ট ভাবে অনুধাবন করতে পেরেছে যে, বাংলাদেশে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো আর কোন যোগ্য নেতা নেই। অর্থাৎ শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। আর এ কারণেই ভারত মনে করে যে, বাংলাদেশ-চীনের সম্পর্ক যেভাবেই এগিয়ে নিক না কেন তা ভারতের স্বার্থের জন্য কখনোই ক্ষতিকর হবে না। শেখ হাসিনা সেটি করবেন না। বরং চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্পর্ক রাখছে তার নিজের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য, অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য। আর এ কারণেই শেখ হাসিনার এই কূটনীতি প্রশংসিত হচ্ছে। ভারত যেমন বাংলাদেশকে এখন এই অঞ্চলের প্রথম বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করছে তেমনি চীনও বাংলাদেশের ব্যাপারে আগ্রহ বাড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

‘তারকাদের আত্মহত্যায় ভক্ত ও সমাজে কি প্রভাব পড়ছে’

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: শোবিজ জগতের তারকাদের বর্তমান সমাজের তরুণ-তরুণী সহ সাধারণ মানুষ অনেকেই নিজেদের আইকন বা আইডল মনে করে। পছন্দের তারকার লাইফ স্টাইল থেকে

ধন্য প্রেম! স্ত্রীর হয়ে পরীক্ষায় বসল স্বামী, অতঃপর’….

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সম্প্রতি পাঞ্জাবে ছদ্মবেশে প্রেমিকার হয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার প্রেমিক। খবরের শিরোনাম হয় ঘটনাটি। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই প্রায় একই কাণ্ড

সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনা এখনও প্রধানমন্ত্রী: রুমিন ফারহানা

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, শেখ হাসিনা ঠিকই বলেছেন, দেশের বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী তিনি এখনও

মানুষ স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে, এখন দেশ গড়ার পালা: তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমরা স্বৈরাচার মুক্ত করেছি দেশ। দেশের মানুষ স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে দেশ থেকে। এখন সামনের দিনে দেশ গড়ার

ফ্রেব্রুয়ারিতে সরকার পতন আন্দোলনের ঘোষণা দেবে আওয়ামী লীগ

অনলাইন ডেস্ক: জুলাই অভ্যুত্থানে পতন হওয়ার পরও থেমে নেই আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র। নানাভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে দলটি। এরই মাঝে আগামী ফেব্রুয়ারিতে হরতাল

চাল আমদানিতে কেজি প্রতি খরচ কমলো ২৫ টাকা ৪৪ পয়সা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরবরাহ বৃদ্ধি করে দেশের বাজারে চালের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে আমদানি শুল্ক, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, আগাম কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া অগ্রিম