
নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে থাকা আটটি ফ্ল্যাট এবং ২৫ একর ২৭ কাঠা জমি রক্ষণাবেক্ষণে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি’) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বুধবার বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর বাড্ডা ও আদাবরে থাকা আটটি ফ্ল্যাট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আদালত তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ২৪ কাঠা জমি, বান্দরবানে ২৫ একর জমি ও রাজধানীর উত্তরায় তিন কাঠা জমি রক্ষণাবেক্ষণেও তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দিয়েছেন। আদালতের পূর্ণাঙ্গ আদেশের পর এসব সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে কোন সংস্থাকে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দেয়া হয়েছে তা জানা যাবে।
গত ১২ জুন এই ২৫ কাঠা ২৭ একর জমি ছাড়াও ঢাকার আটটি ফ্ল্যাট কোকের আদেশ দেন আদালত। এর আগে দুই দফায় রাজধানীর গুলশানের চারটি ফ্ল্যাট ছাড়াও গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরে ৬২১ বিঘা জমিসহ ১৯টি কোম্পানির শেয়ার ক্রোকের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। এছাড়াও ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব এবং তিনটি বিও হিসাব (শেয়ার ব্যবসার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) অবরুদ্ধ করার হয়। পরে এসব সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তত্ত্বাবধায়কও নিয়োগ দেন আদালত।
এরমধ্যে বেনজীর পরিবারের গুলশানে থাকা ৪টি ফ্ল্যাটের রক্ষণাবেক্ষণ ও দেখভালে আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দায়িত্ব দিয়েছিলেন। পাশাপাশি গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরে বেনজীর আহমেদের পরিবারের যেসব কৃষিজমি রয়েছে, জেলা দুটির কৃষি কর্মকর্তাদের ওইসব রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়। সেই সঙ্গে তাদের নামে থাকা মৎস্য ও প্রাণীর খামার দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জেলার প্রাণিসম্পদবিষয়ক কর্মকর্তাকে।
উল্লেখ্য, বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি’) ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
সম্প্রতি বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এ সমস্ত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক। মাঠের অনুসন্ধান প্রক্রিয়া শেষে এখন মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।’