নিজস্ব প্রতিবেদক: সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনার তুঙ্গে থাকা সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ কি দেশে আছেন? নাকি তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন? এটি এখন নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ গত কয়েকদিন ধরে বেনজীর আহমেদের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। বেনজীর আহমেদের মুঠোফোন বন্ধ, তার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করতে পারছে না। এমনকি যারা তার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলো তারাও তাকে পাচ্ছেন না।’
বেনজীর আহমেদ অবসর গ্রহণের পর গুলশানের একটি বাড়িতে থাকতেন এবং এই বাড়িতে তিনি চারটি ফ্ল্যাট কিনে বাড়ি হিসেবে ব্যবহার করতেন। সেই বাড়িতেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। রাজধানীর র্যাংকন আইকন টাওয়ারে বেনজীর আহমেদের খোঁজ নিতে গেলে জানানো হয়, তিনি সেখানে নেই। তাহলে বেনজীর আহমেদ কোথায় অবস্থান করছেন’?
একটি অসমর্থিত সূত্র বলছে, বেনজীর আহমেদ গত ৩ সপ্তাহ আগেই সস্ত্রীক দুবাই চলে গেছেন। তার এক কন্যার জামাতা দুবাইতে চাকরি করেন এবং সেখানেই তিনি অবস্থান করছে বলে একটি সূত্র দাবি করছে। অন্য একটি সূত্র বলছে, বেনজীর আহমেদের পরিবারের কেউই এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন না। তার এক কন্যা এখন লন্ডনে পড়াশোনা করছেন, বাকি দুই কন্যা দুবাইয়ে অবস্থান করছেন এবং বেনজীর আহমেদ তার স্ত্রীকে নিয়ে দুবাই গেছেন বলে জানা গেছে।
এই তথ্যের পেছনে আরো যুক্তি পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র বলছে, যে ৩৩ টি ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করা হয়েছে সেই ব্যাংক একাউন্টগুলোতে তেমন কোন টাকা-পয়সা নেয়। অর্থাৎ ব্যাংক একাউন্ট গুলো অবরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে বা হবে এরকম একটি অনুমান বেনজীর আহমেদ আগেই করতে পেরেছিলেন। এবং সেই একাউন্টগুলো থেকে সব টাকা তুলে ফেলা হয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি অবরুদ্ধ জমি বেনজীর আহমেদ বিক্রি করে দিয়েছেন বলেও তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকের ধারনা, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ার পর পরই তিনি তার দেশীয় সম্পদ গুলো গুটিয়ে, ব্যাংকের সমস্ত টাকা-পয়সা সরিয়ে তিনি বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। তবে, এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কেউ কোন কথা বলতে পারেনি।’
উল্লেখ্য যে, দুর্নীতি দমন কমিশন আইনজীবী খুরশীদ আলমের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান, বেনজীর আহমেদের বিদেশ যাত্রার উপর কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কিনা। এর উত্তরে তিনি বলেন, যদি অনুসন্ধানী দল মনে করে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশ যাওয়া অবরোধ করা দরকার তাহলে আদালতে আবেদন করতে পারে। তবে এধরনের আবেদন এখনো করা হয়নি।
আর একারণেই এখন প্রশ্ন উঠেছে বেনজীর আহমেদ হয়তো দেশে নেই। কারণ তিনি যদি দেশে থাকতেন তাহলে এ সমস্ত প্রতিবেদন এবং রিপোর্টের ভিত্তিতে নিশ্চয়ই তিনি কোন বক্তব্য উপস্থাপন করতেন বা তার একান্ত ঘনিষ্ঠ বা যাদের সঙ্গে তিনি অবসরের পর যাদের সঙ্গে ব্যবসা করছেন সেই ব্যবসায়িক পার্টনারদের সাথেও যোগাযোগ করতেন। কিন্তু এসব কিছু না করার ফলে তিনি যে দেশ ছেড়েছেন এ ধারণাটি ক্রমশ বদ্ধমূল হচ্ছে।’