নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদের ছুটিতে বিএনপি এবং জামায়াতের নেতাদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক সিরিজ বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে। ঈদের আগের দিন, ঈদের দিনে, ঈদের পরদিন-এই তিন দিনই বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে জামায়াতের নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠানের খবর পাওয়া গেছে।
বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের বাসভবনে জামায়াতের অন্তত তিন নেতার বৈঠক হয়েছে ঈদের দিন। এছাড়াও বিএনপির আরেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা ড. মঈন খানের সঙ্গেও জামায়াতের নেতাদের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অন্য একটি সূত্র দাবি করেছে যে, বিএনপি এবং জামায়াতের মহানগর পর্যায়ে নেতারাও নিজেদের মধ্যে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। আর এই সব যোগাযোগের লক্ষ্য হল একটাই তা হল অভিন্ন ভাবে কাজ করা যেন তারা আস্তে আস্তে সরকারের বিরুদ্ধে একটি বড় ধরনের জনমত সৃষ্টি করতে পারে এবং আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেন। আর এই জনমত সৃষ্টি বা আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য বিএনপি এবং জামায়াত অভিন্ন কৌশল নিয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, কৌশলগত কারণে বিএনপি-জামায়াত প্রকাশ্য কোন জোট গঠন করবে না। ২০ দলীয় জোটের যে মৃত্যু হয়েছে তা নতুন করে পুনরুজ্জীবিত করার সম্ভাবনা নেই বলেই দুটি দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সূত্রে জানা গেছে। তবে তারা অভিন্ন ধরনের কর্মসূচি এবং একই রকম অবস্থান থেকে কর্মসূচি পালন করবে। আগামী দিনগুলোতে বিএনপি এবং জামায়াত পাঁচটি বিষয় অভিন্ন কর্মসূচি পালন করার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, জনগণের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে এমন বিষয় এবং জনগণ সহজে সাড়া দেয়, সেই ধরনের বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে এসে আগে জনমত সৃষ্টি করতে চায় বিএনপি এবং জামায়াত। আর এ কারণেই এক দফা আন্দোলন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলন নিয়ে এখনই কোন কর্মসূচিতে যাবে না এই দুটি রাজনৈতিক দল। বরং তারা সামনে যে সমস্ত ইস্যুতে অভিন্ন কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা নিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে;
১. দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে তারা বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করবে ঈদের পর থেকেই। এই কর্মসূচির মধ্যে থাকবে মানববন্ধন, ভুখা মিছিলের মতো নতুন ধরনের কর্মসূচি বলে দুই দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের সূত্রে জানা গেছে।’
২. লোডশেডিং: ইতোমধ্যে গ্রীষ্মের দাবদাহ শুরু হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই দাবদহ বাড়ার সাথে সাথে লোডশেডিং পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে এবং এটি নিয়ে বিএনপি এবং জামায়াত বড় ধরনের কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
৩. অর্থপাচার এবং ব্যাংকিং খাতে লুটপাট: অর্থপাচার এবং ব্যাংকিং খাতে লুটপাট নিয়েও বিএনপি এবং জামায়াত নতুন করে কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সামনের দিনগুলোতে এ নিয়ে বিএনপি এবং জামায়াত শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে পারে বলেও একাধিক সূত্র দাবি করেছে।
৪. ভারত বিরোধী কর্মসূচি: ভারতের আগ্রাসন, সীমান্ত হত্যা সহ নানা প্রসঙ্গ তুলে জামায়াত এবং বিএনপি স্ব স্ব অবস্থান থেকে ভারত বিরোধী কর্মসূচি পালন করার পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
৫. দুর্নীতি: দুর্নীতির ব্যাপারেও বিএনপি এবং জামায়াত সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম জনসংযোগ মূলক এবং প্রচারণামূলক কার্যক্রম পালন করবে। চলতি বছর শেষ পর্যন্ত এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে দুটি রাজনৈতিক দল পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করবে বলে দল দুটির সূত্রে জানা গেছে।’