বিএনপির কমিটি নাটকের নেপথ্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির কমিটিগুলো যেন বাংলা ছোট গল্পের মতো ‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’। কমিটিগুলো বিলুপ্তির পর আস্তে আস্তে কমিটিগুলো নবজন্ম লাভ করছে। কিন্তু কোনটাই পূর্ণাঙ্গ নয়। আংশিক কমিটি দেয়া হচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমন নেতা-কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বাড়ছে, অন্যদিকে বাড়ছে দলের ভিতর হতাশা।’

ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রামের আংশিক কমিটির পর এবার আংশিক যুবদলের কামিটি গঠন করা হয়েছে। এই যুবদলের নতুন কমিটিতে মোনায়েম মুন্নাকে সভাপতি এবং নূরুল ইসলাম নয়নকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। যুবদলের সিনিয়র নেতা এবং যারা রাজপথে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন তাদেরকে কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। যুবদলের আগের সভাপতি সালাহউদ্দিন টুকুসহ বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা নতুন কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন।

বিএনপিতে কমিটি নিয়ে এখন যেন চলছে মিউজিক্যাল চেয়ার। আর এই মিউজিক্যাল চেয়ার কেন হচ্ছে তা নিয়ে বিএনপির মধ্যে নানা মুখী আলাপ-আলোচনা এবং গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, এই সবকিছুই করা হচ্ছে লন্ডন থেকে এবং এখানে বড় ধরনের কমিটি বাণিজ্য হচ্ছে। মুখে বলা হচ্ছে, ত্যাগী পরীক্ষিতদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে, তরুণদেরকে সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে কিন্তু বাস্তবতা হলো সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাস্তবতা হলো যারা টাকা দিতে পারছেন তাদেরকে কমিটিতে রাখা হচ্ছে। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কমিটিতে অন্তর্ভুক্তি ঘটনা এখন বিএনপিতে ওপেন সিক্রেট।

উদাহরণ হিসেবে বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতির জন্য তিনজন প্রার্থী ছিলেন এবং তিনজন প্রার্থী টাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যিনি টাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি কমিটির জন্য মনোনীত হন। কিন্তু এরপরেও কমিটিতে তার নাম ঘোষণা করা হয়নি। যখন তার টাকা নির্দিষ্ট স্থানে বা গন্তব্যে পৌঁছেছে তখনই কমিটিতে তার নাম দেওয়া হয়েছে। এখন আংশিক কমিটিতে যাদেরকে রাখা হয়েছে আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়ক তাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে টাকা সংগ্রহ করে কমিটিতে নাম প্রস্তাব করার জন্য। অর্থাৎ টাকা দিলে কমিটিতে ঢোকা হবে এবং টাকা না দিলে কমিটিতে নেয়া হবে না।

বলা হচ্ছে, এখানে কাজের মূল্যায়ন করা হচ্ছে, ক্লিন ইমেজের অধিকারীদেরকে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু যুবদলের নতুন যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাদের কেউই ক্লিন ইমেজের নন বলে জানা গেছে। এরা অর্থনৈতিকভাবে সম্পদশালী এবং ক্ষমতাসীন সরকারের সাথে বিভিন্নভাবে সম্পর্কিত৷

যুব দলের নতুন সভাপতি মোনায়েম মুন্না সরকারের একজন প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে ব্যবসায়িক অংশীদার এবং তিনি এই বর্তমান সরকারের আমলেও সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ থেকে প্রচুর ব্যবসা বাণিজ্য করছেন৷ অন্যদিকে নূরুল ইসলাম নয়নকে নিয়ে বিএনপির মধ্যেই বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু তাদের মূল যোগ্যতা হলো তারা দু’জনেই টাকা দিতে সক্ষম।

টাকা দিতে পারলেই যে কমিটিতে থাকা যায় তার বড় প্রমাণ হলো সাম্প্রতিক সময়ে যুবদলের কমিটি। আর এর ফলে বিএনপির মধ্যে হতাশা আরও ছড়িয়ে পড়েছে। যারা রাজপথে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, যারা সরকারের সঙ্গে দূরত্ব রেখেছেন এবং যারা অভাবে অনটনে আছেন তারা কেউ কমিটিতে জায়গা পাচ্ছে না। বিএনপিতে এখন পর্যন্ত যতগুলো আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে সকলেই আর্থিকভাবে অত্যন্ত সবল। রাজপথের আন্দোলন তারা করুক না করুক তাদের বিত্ত-বৈভবের অভাব নেয়।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

স্বরস্বতী পূজাকে ঘিরে ব্যস্ত রাউজানের প্রতিমা শিল্পীরা

রয়েল দত্ত, রাউজান প্রতিনিধি: বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার দিনক্ষণ গণনা শুরু। এ উৎসবে প্রধান উপজীব্য প্রতিমা। হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাত্র ছাত্রীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দের এই

‘সংরক্ষিত আসনে চমক হিসেবে যাদের নাম আসছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক: সংরক্ষিত নারী আসনে কারা সংসদ সদস্য হতে যাচ্ছেন তা নিয়ে নানামুখী আলাপ আলোচনা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বৃহস্পতিবার গণভবনে সংরক্ষিত নারী

সিরাজগঞ্জের ৩ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে রিয়াজ, খলিলুর ও আমিনুল নির্বাচিত

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: বুধবার অনুষ্ঠিত সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর ও বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন, খলিলুর রহমান সিরাজী ও ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলাম চেয়ারম্যান

অক্টোবরে আসছে ঘূর্ণিঝড়, রয়েছে বন্যার আশঙ্কা

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: গত মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৩ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। চলতি মাসে (অক্টোবর) বঙ্গোপসাগরে তিনটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যার মধ্যে

বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে প্রতিটি পরিবারকে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ দেওয়া হবে: তারেক রহমান

ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসার সুযোগ পেলে প্রতিটি পরিবারকে ‘স্বপ্ন প্রকল্প ফ্যামিল কার্ড’ প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক

নামাজের কাতার কাবা থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার ছাড়াল’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এবার রমজানে সৌদি আরব নতুন এক ইতিহাসের সাক্ষী হলো। রমজানের দ্বিতীয় জুমার দিন পবিত্র কাবা প্রান্তরে তারাবির নামাজে মুসল্লিদের অস্বাভাবিক ভিড় দেখা দেয়।