নিজস্ব প্রতিবেদক: আপনি যদি আপনার কোন আত্মীয়কে দাওয়াত করে খাওয়ান, তাহলে কি সেটি আপনি ছবি তুলে গণমাধ্যমে দিবেন? নিশ্চয়ই নয়। কারণ এটি একটি অরুচিকর ব্যাপার। তবে এই কাজটি রীতিমতো রেওয়াজে পরিণত করেছিলেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ।
ডিবি অফিসে বিভিন্ন সময় যারা বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তার কাছে যেতেন তিনি সবাইকে দুপুরে লাঞ্চ করাতেন এবং সেই ছবি আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করতেন। ফলে ডিবি অফিস একটা সময় সাধারণ মানুষের কাছে ভাতের হোটেল হিসেবে ব্যাপক পরিচিত লাভ করে।
এই ভাতের হোটেল সর্ব প্রথম ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে গত বছর ২৯ জুলাই। সেদিন ডিবি প্রধান হারুনের অফিসে দুপুরে লাঞ্চ করেছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এর আগে ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ধোলাইখাল মোড় থেকে আটক হন বিএনপির এই নেতা। সেদিন ডিবি অফিসে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের খাওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা তৈরি হয়। কিন্তু এরপরও বিভিন্ন সময় যারা ডিবি অফিসে যেতেন তাদের দুপুরে লাঞ্চ করিয়ে আবার তার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হতো।
সর্বশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের সঙ্গে খাবার গ্রহণের ছবি নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করায় তোপের মুখে পড়েন হারুন অর রশীদ। শুধু তাই নয়, তাদের স্বজনদেরও ডিবি অফিসে ডেকে নিয়ে ভাত খাওয়ান ডিবি প্রধান হারুন। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। হাইকোর্ট বিষয়টিকে জাতির সাথে ‘মশকরা’ মন্তব্য করেন।
শুধু তাই নয়, এই ভাতের হোটেলের বিষয়টি গণভবন পর্যন্ত গড়ায়। গত সোমবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ১৪ দলের বৈঠকে আলোচনা হয়। সেখানে ১৪ দলের নেতারা ডিবি প্রধান হারুনের কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করেন। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নিজেও। এরপর ডিবি হারুনকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে ব্যাপক গুঞ্জন চাউর হয়। অবশেষে আজ তাকে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) হিসেবে বদলি করা হলো। আর এর ফলে ডিবি অফিসের ভাতের হোটেল এখন বন্ধ হয়ে গেল।’