নিজস্ব প্রতিবেদক: আলোচিত-সমালোচিত নতুন শিক্ষাক্রম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে শিক্ষাবর্ষের নবম মাসে এসে শিক্ষাক্রম সংশোধনের ঘোষণা আসায় বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেয়া নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, মে-জুন মাসে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের পাণ্ডুলিপি প্রুফ রিডিং হয়। তবে, এবার সেপ্টেম্বরের শুরুতে এসেছে বই সংশোধনের ঘোষণা। তাই পাঠ্যবইয়ের পাণ্ডুলিপি সংশোধন ও ছাপা শেষে সাধারণ স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১ কোটি ৮৯ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে বছরের শুরুতে ২৩ কোটির বেশি কপি বই পৌঁছে দেয়ার নতুন চ্যালেঞ্জ এনসিটিবির সামনে।
দায়িত্ব নেয়ার ২৩দিনের মাথায় নতুন শিক্ষাক্রম বা জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় বলছে, শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয়। তাই ২০২৫ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করে ২০২৬ সাল থেকে তা পরিপূর্ণরূপে কার্যকর করা হবে। তার আগে ২০২৫ সালে শিক্ষার্থীদের জন্য অনেকটা আগের শিক্ষাক্রমের ধাঁচের পাঠ্যবই বিতরণ করা হবে।
প্রতিবছর সাধারণ স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমিক পর্যায়ের ১ কোটি ৮৯ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য ২৩ কোটি কপি বই ছাপানো ব্যবস্থা করে এনসিটিবি। মে-জুন মাসে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বইয়ের পাণ্ডুলিপিগুলো প্রুফ রিডারদের মাধ্যমে প্রুফ রিড হওয়ার কথা ছিল। তবে সেপ্টেম্বরে বই সংশোধনের ঘোষণা এসেছে।
প্রতিবছর সাধারণ স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমিক পর্যায়ের ১ কোটি ৮৯ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য ২৩ কোটি কপি বই ছাপানো ব্যবস্থা করে এনসিটিবি। এনসিটিবির কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, মে-জুন মাসে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বইয়ের পাণ্ডুলিপিগুলো প্রুফ রিডারদের মাধ্যমে প্রুফ রিড হওয়ার কথা ছিল। তবে সেপ্টেম্বরে বই সংশোধনের ঘোষণা এসেছে। শিক্ষাবর্ষের নবম মাসে বই সংশোধনের ঘোষণা আসায় বছরের শুরুতে সংশোধিত বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো নিয়ে আত্মবিশ্বাসী নন কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে পাণ্ডুলিপি সংশোধন, প্রুফ রিডিং, টেন্ডার আহ্বানের পর ২৩ কোটি কপি বই ছাপিয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো যাবে কী-না তা নিয়ে শঙ্কা আছে।
পাঠ্যবই মুদ্রণ কাজটি সরকারি-বেসরকারি দুইখাতেই সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। যদি এর সঙ্গে জড়িত অন্যান্যরা পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে সমন্বয় করেন তবে এটি বাস্তবায়ন সম্ভব। তবে তা যদি না হয় তাহলে অবশ্যই চ্যালেঞ্জ আছে।-এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান
যদিও এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসানের মতে ‘তাত্ত্বিকভাবে’ সম্ভব। তবে, এজন্য পাণ্ডুলিপি সংশোধন থেকে বই ছাপানো ও স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দেয়ার জন্য দায়িত্বে যারা থাকবেন তাদের সমন্বয় জরুরি। তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে এ বিশাল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন তাত্ত্বিকভাবে সম্ভব। আমাদের হাইস্পিড মেশিন আছে। তবে পাঠ্যবই মুদ্রণ কাজটি সরকারি-বেসরকারি দুইখাতেই সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। যদি এর সঙ্গে জড়িত অন্যান্যরা পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে সমন্বয় করেন তবে এটি বাস্তবায়ন সম্ভব। তবে তা যদি না হয় তাহলে অবশ্যই চ্যালেঞ্জ আছে।
তিনি আরও জানান, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির বইয়ের টেন্ডার হয়েছে, যা পার্চেস কমিটিতে যাওয়ার পর্যায়ে আছে। পার্চেস কমিটির সিদ্ধান্ত একটু তাড়াতাড়ি হলে তাড়াতাড়ি প্রেসে যাওয়ার সম্ভব ছিলো। এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী নবম শ্রেণির পাঠ্যবই ২০১২ সালে প্রণীত আগের কারিকুলামের আঙ্গিকে হবে। সেটার টেন্ডার হয়নি। এ টেন্ডার প্রক্রিয়া একদমই নতুন। টেন্ডারের বিভিন্ন ধাপ আছে, সেটি সংক্ষিপ্তও করা যায়; তবে কতদূর সংক্ষিপ্ত করা হবে সেটির ওপর নির্ভর করবে কবে নাগাদ বই দেয়া যায়। তবে ২০১২ ও ২০২১ দুই শিক্ষাক্রমের পাণ্ডুলিপি এনসিটিবির কাছে আছে জানিয়ে চেয়ারম্যান ইঙ্গিত দেন, সংশোধনের প্রক্রিয়া খুব জটিল হবে না।’