নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গত বৃহস্পতিবার (৯ ই মে) ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে পালিত হলো বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থানে গাঁজাখোরদের মহামিলন মেলা!!
মহাস্থানে হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (রঃ) এর বিজয় দিবস হলো বৈশাখের শেষ বৃহস্পতিবার যা ওরশ হিসাবে পালন করা হয়। ওরশ উপলক্ষে বসে মেলা। শুধুমাত্র ধর্মীয় রীতিনীতির মধ্যে দিয়ে পালন করার কথা থাকলেও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত জটাধারী সাধু সন্ন্যাসীরা প্রকাশ্যে ও অবাধে করেছে গাঁজা বিক্রয় এবং সেবন।
যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
নাচ গান আর গাঁজা সেবনের মধ্যে দিয়েই কেটে গেল বৈশাখের শেষ বৃহস্পতিবার বা শেষ বৈশাখী মেলা।
প্রতি বছরের ন্যায় পুন্ড্রনগরের রাজধানী ঐতিহ্যের বাহক ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ে হযরত শাহ্ সুলতান বলখী মাহীসওয়ার (রহঃ) এর মাজার এলাকায় বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার এই মেলা বসে।
নারী পুরুষের উপস্থিতিতে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু হয় গাঁজাখোরদের আসা। তারা একটি জায়গায় তাবু গেড়ে অবস্থান নেয়। দিন শেষে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে মাযার ও আশপাশের এলাকায় শরিয়ত, মারিফত, তরিকত, হাকিকত, মুরশীদি, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী সহ বিভিন্ন ধরনের গান নেচে গেয়ে রাত কাটিয়েছে ভক্তরা।
জটাধারী নারী পুরুষ গানের ফাঁকে ফাঁকে মনের সুখে গাঁজার কলকিতে টান দিয়ে রাত পাড়ি দেয়। গাঁজার ধুঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে মহাস্থানগড় এলাকার আকাশ বাতাস। এসব দৃশ্য দেখতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছিলো হাজারো দর্শনার্থী। মহাস্থান এলাকায় গাঁজার ধুঁয়া বন্ধ করতে এবারও প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছিল কিন্তু দৃশ্যমান কোন লাভ হয়নি।
বগুড়া পুলিশের সূত্র জানায়, এবার শেষ বৈশাখিতে গাঁজা সেবন তথা মাদকমুক্ত পরিবেশ এবং সার্বিক আইনশৃংখলা বজায় রাখতে ম্যাজিস্ট্রেট সহ বিপুল পরিমান পোষাক ও সাদা পোষাকে পুলিশ, র্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন দায়িত্ব পালন করেছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মাজার। আগত সন্দেহভাজন মানুষদের তল্লাশী করা হয়েছে। তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সারাদিন ও রাত লাখো দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর ছিলো। মাজার মসজিদ এলাকায় জিকির, মিলাদ মাহফিল ও নফল নামাজ নিয়ে মুসুল্লীগণ ব্যস্ত ছিলেন। প্রায় দুই কিলোঃ এলাকা জুড়ে সহস্রাধিক স্থায়ী ও ভ্রাম্যমান দোকানী তাদের পসরা খুলে বসেছিলো। আর বিক্রিও হয়েছে প্রচুর। কটকটি ভান্ডার গুলিতে বিক্রি হয়েছে বেশ। পাশের গ্রামগুলোতে জামাইদের আগমন ছিল লক্ষ্যণীয়।
রাত যত বেশি হচ্ছিলো তত লোকজনের সমাগম বাড়তেছিলো।
তবে গত কয়েক বছর আগে মহাস্থান মাজার এবং মসজিদ কর্তৃপক্ষ গাঁজা সেবনকারীদের মিলন মেলার পরিবর্তে এই দিনকে হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (রহঃ) এর বিজয় দিবস ঘোষনা করেছিলো৷ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মুসুল্লীদের রাতভর জিকির আসগার, মাজার জিয়ারত ও নফল ইবাদত করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। মাযার ও মসজিদের খতিব ও ঈমাম মুসুল্লীদের ধর্মের দীক্ষা দিয়েছেন। সবুজ শ্যামলে ঘেরা ঐতিহাসিক মহাস্থানের ভূমিতে চিরনিদ্রায় শায়িত ওলিয়ে কামেল হযরত সুলতান বলখী মাহী সওয়ার (রহঃ) এর মাজার এলাকার পবিত্রতা রক্ষায় ও আইন শৃংখলা জোরদার করার দাবী জানিয়েছে আগত ধর্মপ্রান মুসলমানরা।
শুক্রবার জুমআর নামাজ আদায় করে অনেকেই নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গেছেন।সমাপ্ত হয় এক মহৎকর্মের।