নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি)। আওয়ামীপন্থী এক কর্মকর্তার ফেসবুকের একটি কমেন্টকে কেন্দ্র করে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সেখানে তিনি লিখেছেন, “ওরা তো পারলে দেশের নামই বদলিয়ে ফেলে। আমার মনে হয় আমাদের চুপ না থেকে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।” সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাবির রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে এখনো পতিত স্বৈরাচারের অনেক কর্মচারী নিযুক্ত রয়েছেন। ফেসবুকের এই কমেন্টেই তার উদাহরণ।
ওই কর্মকর্তার নাম মঞ্জুর হোসেন। ৫ আগস্টের আগে তিনি ভিসি অফিসের ডেপুটি রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তবে সম্প্রতি তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।’
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আবু হোসেন এম আহসান সম্প্রতি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন, সিন্ডিকেট সভায় আওয়ামীপন্থী সদস্যদের না ডাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সেখানে। পোস্টে তিনি নির্বাচিত সিন্ডিকেট সদস্যদের আমন্ত্রণ না জানানোর বর্তমান প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত বেআইনি, অদূরদর্শী ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেন।
প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বডির ৫ সদস্যকে পরবর্তী সভা থেকে আর আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরমধ্যে অধ্যাপক আবু হোসেন এম আহসান একজন। তার এই স্ট্যাটাসের কমেন্টে ডেপুটি রেজিস্টার মঞ্জুর হোসেন মন্তব্যটি করেন।
জানা যায়, মঞ্জুর হোসেন ছাত্র জীবনের ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। পরে ২০২০ সালে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটিতে সদস্য হিসেবে দায়িত্ব ছিলেন তিনি। এই বছরের ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত কমিটিতে তার নাম ৩৭ নম্বরে ছিল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মঞ্জুর হোসেন বলেন, আমি বলেছি নিজেরা আলোচনা করে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। তবে কমেন্টের ‘ওরা পারলে দেশের নামই বদলিয়ে ফেলে’ এই কথার মাধ্যমে তো প্রশাসনকে আগেই অভিযুক্ত করা হয়। এরপর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলে প্রশাসন বিরোধী একটি নির্দিষ্ট একটি গোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলা হয় এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ আরকানুল ইসলাম রূপক বলেন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার মঞ্জুর হোসেন আওয়ামী লীগের পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য। তিনি এখনও স্বৈরাচারের হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে আওয়ামীপন্থী যারা আছে সবাইকে সাথে প্রতিরোধ গড়ে তুলার কথা বলছেন। রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে এখনও স্বৈরাচারের অনেক কর্মচারী নিযুক্ত আছেন, সেটা প্রমাণ।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর)। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করা কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এটা আমি এইমাত্র শুনলাম। কালকে অফিসে গিয়ে বলব। দেখব যে এটার কি অবস্থা। আর ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) তো এখন দেশে নাই। উনি আসবেন তারপরে আমরা আলোচনা করব। যদি মনে হয় যে এটা গুরুত্বপূর্ণ তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’