নিজস্ব প্রতিবেদক: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির মহাসচিব, তার চেয়েও বড় পরিচয় হলো বিএনপির এখন প্রাণভোমরা তিনি। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ এবং মুচলেকা দিয়ে তার বাসায় রয়েছেন। অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া লন্ডনে পলাতক, তিনি দলের সার্বক্ষণিক নেতা নন। মাঝে মাঝে বিভিন্ন উদ্ভট আদেশ দেওয়ার কারণে তিনি এখন দলের সাধারণ কর্মীদের কাছে বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে বিএনপি নেতাদের আশা ভরসা। গত বৃহস্পতিবার তিনি যখন মুক্তি পান তখন দলের নেতাকর্মীরা বলেছিলেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর আন্দোলনের গতি বাড়বে। কিন্তু জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া সঙ্গে দু’একবার কথাবার্তা বলা ছাড়া আর তেমন কোন কর্মকাণ্ডের মধ্যে এখন পর্যন্ত সম্পৃক্ত নন বিএনপির এই মহাসচিব। তিনি বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছেন। তার পারিবারিক সূত্র বলছে, কারান্তরীণ থাকার কারণে বিভিন্ন রোগ শোক দানা বেঁধেছে তার শরীরে। এ জন্য তিনি কিছুটা অসুস্থ বোধ করছেন। আর এই কারণেই আগামী ৭ মার্চ তার সিঙ্গাপুর যাওয়ার কথা। সিঙ্গাপুর যাওয়ার সব আয়োজন ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
তার পারিবারিক সূত্রগুলো বলছে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি সিঙ্গাপুর যেতে পারেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সিঙ্গাপুর যাত্রা নিয়ে এক ধরনের রহস্য তৈরি হয় সবসময়। বিভিন্ন সময়ে তিনি সিঙ্গাপুরে কেন যান, সেখানে তিনি শুধু কি সফরে যান কি না, সেটা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, তেমনই প্রশ্ন আছে যে, তার সিঙ্গাপুর সফরের খরচ কে বহন করে সেটি নিয়েও। কারণ এরকম ব্যয়বহুল চিকিৎসা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
নিজের টাকায় করবেন এটা কেউ বিশ্বাস করতে পারে না।’
বিভিন্ন সময়ে গুঞ্জন উঠেছে যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের চিকিৎসার জন্য সরকার খরচ বহন করে। যদিও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই ধরনের বক্তব্যকে অপপ্রচার এবং অরুচিকর অপপ্রচার বলে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো যে, ঘন ঘন সিঙ্গাপুর যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেউ কেউ মনে করেন যে, সিঙ্গাপুর সফরে গিয়ে তিনি রাজনৈতিক বিভিন্ন দিকনির্দেশনা গ্রহণ করেন। তারেক জিয়ার অন্তত দুজন একান্ত অনুগত আছেন, যারা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিঙ্গাপুরে গেলেই তারাও সিঙ্গাপুরে যান এবং সেই সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে অনেক বিষয়ে পরামর্শ দেন।
তবে এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কেন সিঙ্গাপুরে যেয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে সেটি নিয়েও কারও কারও মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ এখন ইন্টারনেটের যুগ, যে কোন ব্যক্তির সঙ্গে যে কোন প্রান্তে টেলিফোনে আলাপ করা যায়। তবে বিএনপির কোনো কোনো নেতা বলছেন যে, এই সমস্ত টেলিফোন গুলোকে মনিটরিং মনে করা হয়। এই কারণে তিনি সিঙ্গাপুর দিয়ে নিশ্চিন্ত ভাবে কথাবার্তা বলেন।
তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবার কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পরপরই একটি রহস্যময় আচরণ করছেন বলে বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করছেন। তারা বলছেন যে, যেমনটি আশা করা হয়েছিলো যে, মির্জা ফখরুল বের হলেই আন্দোলনের গতি বাড়বে তেমনটি হচ্ছে না। ইতোমধ্যে তিনি দুই একজন নেতাকে রয়ে সয়ে সব কিছু করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। আস্তে আস্তে কর্মসূচিকে ঢেলে সাজানোর ব্যাপারেও তিনি মতামত দিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। অর্থাৎ আন্দোলনের লাগাম টেনে ধরা এবং এক ধরনের সমঝোতামূলক মনোভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মধ্যে। তাহলে কি সরকারের সাথে সমঝোতা করেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুক্তি পেলেন। আর সরকারের আনুকূল্যেই কি তিনি আবার সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য-এই প্রশ্ন এখন সবচেয়ে বড় হয়ে সামনে এসেছে।’