
আব্দুল লতিফ সরকার,আদিতমারী প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের পাটগ্রামে সকাল থেকে বিকেল পযন্ত দেখা মিলছে না সূর্যের আলোর , কুয়াশায় চারপাশ ঢাকা পুরো পাটগ্রাম শহর। শীতে জবুথবু প্রাণপ্রকৃতি, দেশের উত্তরাঞ্চলে এই লালমনিরহাট জেলার পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে হিমালয়া পাহাড় থাকার কারণে উত্তর অঞ্চলে এই হারকাপানো শীতের এমন প্রকোপে পাটগ্রাম উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আশঙ্কাজনকহারে নিউমোনিয়ায় ও ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শীতের অতিরিক্ত তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিউমোনিয়ায়, হাঁপানি জ্বর-সর্দি, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে প্রতিদিনই পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় করছেন রোগীরা । তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু ও বয়স্ক। শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী ধারণক্ষমতারও ৫-৬ গুণ বেশি। এর মধ্যে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ৮০-৯০ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এবং তাদের অধিকাংশই শিশু ও অর্ধ বয়স্ক রোগী। বহিঃবিভাগে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ জন চিকিৎসা নেওয়াদের মধ্যেও শীত ও ভাইরাসজনিত রোগী বেশি।
পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সারজমিনে গিয়ে দেখা যায় শিশু ওয়ার্ডে ঠান্ডা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক শিশু চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে এবং যারা বেশি গুরুতর ভাবে অসুস্থ তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পাটগ্রাম পৌর ৫ নং বানিয়াপাড়া গ্রাম থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু সন্তানকে নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা মোঃ সাগর ইসলাম বলেন, আমার মেয়ে ডায়রিয়া জনিত রোগ সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি ১ দিন হলো। চিকিৎসা নিতে এসে সব ধরনের ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি কিছু ওষুধের ব্যবস্থা করে দিত তাহলে আমাদের গরীব মানুষদের উপকার হতো। তবে ডাক্তার নিয়মিত দেখাশোনা করছেন চিকিৎসা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। আমার মেয়ের মতো অনেকে ঠান্ডাজনিত রোগে এখানে আছেন। এখানকার চিকিৎসার মান মোটামুটি ভালো বলেও জানান তিনি।
পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. জহির উদ্দীন মো. বাবর বলেন, গত বাড়ের তুলনায় এবার অনেক বেশি শীত হওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত আমাদের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ঠান্ডাজনিত রোগ সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ফুসফুস সংক্রমণ ও হাঁপানি এ রোগীগুলোকে আমরা প্রচুর পরিমাণে পাচ্ছি। এখন প্রতিদিন আমরা আউটডোরে ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী সেবা দিচ্ছি এর মধ্যে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা ৩০ শতাংশ এবং বাকিগুলো অন্যান্য সমস্যা নিয়ে আসে। আমাদের ইমার্জেন্সিতে বয়স্ক যারা আসে তারা সাধারণত শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসতেছে। শিশুরা ঠান্ডাজনিত নিমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ে আসতেছে। আমরা আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা প্রধান করছি। শীতে ঠাণ্ডা ও ভাইরাসজনিত রোগ থেকে শিশুর সুরক্ষায় অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু রায় জানান, গত কয়েক দিন থেকে জেলায় শীতের হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘন কুয়াশা হওয়ায় বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে ফলে হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা স্বাস্থ্য বিভাগ শিশু এবং বয়স্কদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।