নিজস্ব প্রতিবেদক: বডিবিল্ডার ফারুক হোসেনের মৃত্যুতে দিশেহারা তার পরিবার। তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে স্ত্রী ঈমা আক্তারের। পরিবারের অভিযোগ, গত ১২ জানুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোড থেকে আড়াইশ’ গ্রাম গাঁজা দিয়ে ফাঁসিয়ে ফারুককে আটক করে পুলিশ। পরে কায়েতটুলী ফাঁড়ি ও বংশাল থানায় নির্যাতনে মৃত্যু হয় তার।
ফারুকের স্ত্রী ঈমা আক্তারের দাবি, স্বামীকে ছেড়ে দিতে প্রথমে ১ লাখ টাকা চেয়েছিল পুলিশ। পরে দেয়া হয় কুপ্রস্তাব। তিনি বলেন, কায়েতটুলীর পুলিশ ১ লাখ টাকা চাইছে আমরা স্বামীকে ছাড়ার জন্যে। পরে বলে আপনি আমাদেরকে খুশি করেন, আমরা আপনার স্বামীকে ছেড়ে দেবো।
বাবাহারা ছোট ছোট তিন ছেলেকে নিয়ে এখন দিশেহারা ঈমা। জানান, অভিযোগ তুলে নিতে হুমকি দেয়া হচ্ছে অপরিচিত নম্বর থেকে। ঈমা বলেন, ফোন দিয়ে নাম-ঠিকানা বলে না, শুধু বলে মামলা তুলে না নিলে আমাদের ক্ষতি করবে।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি চেয়েছেন পুরান ঢাকার খাজে দেওয়ান এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয়রা জানায়, ফারুক ভালো ছেলে। কোনো নেশা করে না। কারও সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটিও ছিল না। ওনাকে যদি সত্যি ওভাবে মেরে থাকে তবে আমরা এটির বিচার চাই।
থানায় আগে থেকে মামলা বা অভিযোগ না থাকলেও পুলিশ বলছে, ফারুক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। নির্যাতনের অভিযোগও অস্বীকার করেন তারা। জানান, তাদের হেফাজতে মারা যায়নি। তিনি মারা গেছেন জেলখানার হেফাজতে।
ফারুকের স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেছে পুলিশ। তাদের দাবি, এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন। যা পুরোপুরি মিথ্যা।
এদিকে, ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে ডিএমপির লালবাগ বিভাগ। অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. বদরুল হাসান বলেন, তদন্ত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আমরা ইতোমধ্যে থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। এছাড়া তদন্ত সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনের জবানবন্দিও গ্রহণ করেছি।
তবে পুলিশের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ পুলিশই তদন্ত করলে পক্ষপাতিত্বের শঙ্কা থাকে বলে মন্তব্য করেন অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক। তিনি বলেন, আমার তদন্ত যদি আমার বাহিনীর বা আমার পেশার অন্যকেউ করে থাকে, তাহলে তিনি আমাকে, আমার বাহিনীকে বাঁচানোর চেষ্টা করবেন।
তবে পুলিশের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ পুলিশই তদন্ত করলে পক্ষপাতিত্বের শঙ্কা থাকে বলে মন্তব্য করেন অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক। তিনি বলেন, আমার তদন্ত যদি আমার বাহিনীর বা আমার পেশার অন্যকেউ করে থাকে, তাহলে তিনি আমাকে, আমার বাহিনীকে বাঁচানোর চেষ্টা করবেন।
গত ৩১ জানুয়ারির এ ঘটনার সত্যতা খতিয়ে দেখতে ডিবিকে নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত। যার প্রতিবেদন দিতে হবে ২৮ মার্চের মধ্যে।’