নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে আরও কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাদের মধ্যে অন্তত দু’জন পিএসসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তারা পদমর্যাদায় উপপরিচালক (ডিডি) ও সহকারী পরিচালকের (এডি’) ওপরে।
তবে তথ্য-প্রমাণসহ আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত ওই দু’জনের নাম-পরিচয় প্রকাশে রাজি হননি তদন্তসংশ্লিষ্ট এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তবে গ্রেপ্তার কয়েকজনের সঙ্গে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে তাদের তথ্য আদান-প্রদানের কিছু তথ্য গোয়েন্দারা পেয়েছে।
এদিকে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলামের কাছে ১০ কোটি টাকার চেক পাওয়া গেছে। চাকরিপ্রত্যাশীদের যারা চেক দিয়েছেন, তাদের তালিকা এখন গোয়েন্দাদের হাতে। জিজ্ঞাসাবাদে সাজেদুল স্বীকার করেছেন, চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতেই এসব চেক নেওয়া হয়। গতকাল বুধবার একটি দায়িত্বশীল সূত্র এসব তথ্য জানায়।
নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সিআইডি পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম, খলিলুর রহমানসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সাজেদুলের বাড়ি নোয়াখালীর চরজব্বারের মধ্য চরবাটায়। পরীক্ষার আগে থেকেই সাজেদুল ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। টাকার দেনদরবারও হতো আগেভাগে এবং ব্যাটেবলে হলে সাজেদুল অগ্রিম চেক নিয়ে রাখতেন। এখন পর্যন্ত তাঁর কাছ থেকে ১০ কোটি টাকার চেক পাওয়া গেছে। এ ছাড়া সিআইডির অভিযানে এখন পর্যন্ত ৭১ লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে। এই চক্র আরও ৩০টি সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সূত্র জানায়, পরীক্ষার আগে সাজেদুল চাকরিপ্রার্থীদের ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় ভাড়া বাসা এবং মেসে জড়ো করতেন।
পরীক্ষা শুরুর আগেই গোপনে সমাধানসহ হুবহু প্রশ্ন দিতেন। যেসব বাসা-মেস তিনি এ অপকর্মে ব্যবহার করতেন, সেগুলোকে ‘বুথ’ বলা হয়। রাজধানীর রামপুরা ও খিলগাঁওয়ে এ ধরনের চার-পাঁচটি বুথের সন্ধান মিলেছে। এ চক্রের আরেক বুথ ছিল পল্টনের কালভার্ট রোডে। এ ছাড়া আবেদ আলী সাভারের রেডিও কলোনিতে কক্ষ ভাড়া নিয়ে ফাঁস করা প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করানোর ব্যবস্থা করেন।’