ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিলেটের নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে। এ কারণে সিলেট মহানগরীসহ জেলার ১২টি উপজেলাই কমবেশি প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে সোমবার (১৭ জুন) দিনভর বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ শহরের নতুনপাড়া, তেঘরিয়া, সুলতানপুর ও উকিলপাড়াসহ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আজ মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলার সুরমা, কুশিয়ারা, সারি ও সারি-গোয়াইন নদীর ছয়টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় সিলেটে ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তর। সিলেটে মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলেও জানানো হয়। এছাড়াও, গত ২৪ ঘণ্টায় আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৩৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। সিলেটে কখনো একটানা, কখনো আবার থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে।’
এর আগে গত ২৯ মে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল। ৮ জুনের পর থেকে বন্যা পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসে। এরপর গতকাল থেকে একটানা ভারী বৃষ্টি দেখা দিলে সিলেটে ফের বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সোমবার (১৭ জুন) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জেলায় ৫৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষজন উঠতে শুরু করেছেন। এরইমধ্যে ৬৮ জন আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ঠাঁই নিয়েছেন। গতকাল রাত পর্যন্ত জেলায় বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ৬৯টি ইউনিয়ন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো’) সিলেটের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলার সুরমা, কুশিয়ারা, সারি ও সারি-গোয়াইন নদীর ছয়টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এর মধ্যে পানি সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ১ দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে শূন্য দশমিক ২২ সেন্টিমিটার; কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে শূন্য দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে শূন্য দশমিক ৭৯ সেন্টিমিটার, সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে শূন্য দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার এবং সারি-গোয়াইন নদীর গোয়াইনঘাট পয়েন্টে শূন্য দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এদিকে সুনামগঞ্জের দেখার হাওড় ও সুরমা নদীর পানি উপচে নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরে ঢুকে পড়েছে। জগন্নাথপুর, সোলেমানপুর, ছাতক ও শক্তিয়ারখলাসহ ৬টি পয়েন্টে পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। জেলার ছোট-বড় ১৩৭টি হাওড় এখন পানিতে টইটম্বুর। কূল উপচে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।’