ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: মর্যাদার নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শুরু হচ্ছে আজ সোমবার থেকে। ছয় দিনে এই মূল্যবান পুরস্কার ঘোষণা করা হবে। আগামী ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা হবে। পুরস্কার ঘোষণার সবকিছু নোবেল প্রাইজ নামের একটি ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হবে।
প্রতিবছর নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু হয় অক্টোবরের প্রথম সোমবার । নোবেল প্রাইজ ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (৭ অক্টোবর) চিকিৎসাশাস্ত্রের নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। আগামী ৮ অক্টোবর পদার্থবিদ্যা, ৯ অক্টোবর রসায়ন, ১০ অক্টোবর সাহিত্য, ১১ অক্টোবর সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুরস্কার শান্তিতে নোবেল জয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। এছাড়া ১৪ অক্টোবর অর্থনীতিতে বিজয়ীর নাম ঘোষণার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা।
নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রতিবছর ৩০০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এক বা একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এই পুরস্কার দেয়া হয়।
সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের ১৮৯৫ সালে করে যাওয়া একটি উইল অনুযায়ী নোবেল পুরস্কার প্রচলন করা হয়। প্রথম পুরস্কার দেওয়া শুরু হয় ১৯০১ সালে। সেময় সারা পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে সফল, অনন্যসাধারণ গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবকল্যাণমূলক কার্যক্রমের জন্য পাঁচটি বিষয়ে পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিষয়গুলো হলো পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাশাস্ত্র, সাহিত্য ও শান্তি। পরবর্তীতে এই তালিকায় আরও একটি ক্যাটাগরি যুক্ত হয়। ১৯৬৯ সাল থেকে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়।
২০২৩ সালে নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য বাড়িয়ে ১ কোটি ১০ লাখ ক্রোনা করা হয়। প্রত্যেক পুরস্কারের জন্য সনদ ও সোনার মেডেলসহ এই অর্থমূল্য দেওয়া হবে।
শুধু বিচারকরাই জানেন কারা পেতে যাচ্ছেন নোবেল পুরস্কার। পুরস্কার ঘোষণার আগে অন্য কারো পক্ষে বিজয়ীদের নাম জানা কোনোভাবে সম্ভব হয় না। এমনকি বিজয়ীদের নাম ঘোষণার আগে ইঙ্গিত দেওয়া থেকেও বিরত থাকেন বিচারকরা। তবে এ বিষয়ে কিছু জল্পনা থাকে সব সময়।
বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার মানুষ নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেন। এর মধ্যে থাকতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আইন প্রণেতা, আগের নোবেল বিজয়ীও। তাছাড়া কমিটির সদস্যরাও আবেদন করতে পারেন। যদিও ৫০ বছরের আগে এসব মনোনয়নের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করা হয় না।
শুধু শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয় অসলো, নরওয়ে থেকে। বাকি ক্ষেত্রে স্টকহোম, সুইডেনে এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
এদিকে চলতি বছরে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তার পাশাপাশি ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য নিবেদিত জাতিসংঘের ফিলিস্থিতি বিষয়ক শরণার্থী সংস্থা (আনরোয়া) ও জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ড অব জাস্টিসকেও (আইসিজে) একই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর)। একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২৪ সালের শান্তিতে নোবেলের জন্য রাশিয়ার সাবেক বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও সম্ভাব্য মনোনীতদের তালিকায় ছিলেন। কিন্তু পরে উভয়কেই বাদ দেওয়া হয়েছে।
মারা যাওয়ার কারণে অ্যালেক্সেই নাভালনির নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। আর যুদ্ধরত একটি দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ায় বাদ পড়েছেন জেলেনস্কি।’
নরওয়ের থিঙ্কট্যাংক সংস্থা পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক হেনরিক উরদাল রয়টার্সকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দীর্ঘ দিন ধরেই সংঘাত-সংঘর্ষ চলছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তার তৃতীয় বছরে পা রাখতে চলেছে, সুদানে গত দেড় বছর ধরে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত। অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-হামাস এক বছর ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সংঘাতপূর্ণ এই পরিস্থিতিতে সহিংসতা ও রক্তপাত বন্ধে যারা বা যেসব সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, নোবেল কমিটি এবারের শান্তি পুরস্কারের জন্য তাদেরকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে।’