সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জে দিন-দুপুরেও ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা রয়েছে জেলার জনপদ। মাঘের হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডা ও হিমেল বাঁতাসে কাঁপছে যমুনা নদী পাড়ের মানুষ। গত ৩দিন সূর্যের দেখা না পাওয়ায় শ্রমজীবী, ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর কর্মজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
সোমবার (২২ জানুয়ারি’) সকাল থেকে জেলার কোথাও সুর্য্যরে দেখা মেলেনি। এতে কৃষক, কৃষাণী ও কর্মজীবি মানুষেরা বিপাকে পড়েছে।
তাড়াশ কৃষি আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আজ ১০. ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রয়েছে। এটিই এই মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় দুপুর পর্যন্ত বেশি ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। তীব্র ঠান্ডার সঙ্গে হিমেল বাতাসে অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিতে দেখা গেছে। দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহগুলো হেড লাইট জ্বালিয়ে চলচল করছে। এমন আবহাওয়া আরও দুদিন থাকবে এবং ২৪ তারিখে একটু বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে, গত তিনদিন ধরে কুয়াশা আচ্ছন্ন রয়েছে জেলা জুড়ে। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ সড়কসহ জেলার সব সড়ক মহাসড়কে কুয়াশার কারণে যান চলাচলে হেডলাইট ব্যবহার করতে হচ্ছে চালকদের।
ব্যাটারি চালিত অটো ভ্যান চালক শফিকুল ইসলাম বলেন, সারাদিন ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। তবে এই তীব্র শীতেও যেন পরিবারের সঙ্গে ঘরে থাকার সুযোগ নেই। কয়েকদিন ধরে খুব শীত, তার উপর আবার ঠান্ডা বাতাস। বাইরের মহাসড়কে চলাফেরা করলে ঠান্ডা আরও বেশি লাগে, ভীষণ কষ্ট হয়। কিন্তু পেট তো আর শীত-গরম মানে না। জীবিকার সন্ধানে বের হয়েছি। কাজ না করলে খাব কি।
ব্যাটারি চালিত রিকশা চালক আব্দুল আলিম বলেন, সকালে কুয়াশার কারণে কিছুই দেখা যায়নি। এখন রাস্তাঘাট দেখা যাচ্ছে। যখন কুয়াশা থাকে তখন রাস্তায় রিকশা চালাতে বেশি ভয় করে। দেখতে না পেয়ে এই বুঝি কোনো গাড়ি চাপা দিয়ে চলে যাবে। যেহেতু জীবিকা নির্বাহ করতে হবে, পরিবারকে খাওয়াতে হবে, তাই কষ্ট হলেও গাড়ি চালাতে হচ্ছে।’
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, রবিবার (২১ জানুয়ারি) রাত থেকে শুরু করে সোমাবর সকাল পর্যন্ত কুয়াশাচ্ছন্ন রয়েছে এ মহাসড়ক। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। তবে সুর্য্যরে আলো কিছুটা বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই গাড়ি চলছে।
তাড়াশ কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিসের (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, আজ ১০. ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রয়েছে। এটা জেলার সর্ব নিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত ২১ জানুয়ারী ছিলো ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তিনি বলেন, চলতি শীত মৌসুমে এ অঞ্চলে এটি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আবহাওয়ায় উচ্চচাপ বলয়ের কারণে কুয়াশার তীব্রতা বেড়েছে। জানুয়ারি মাস জুড়েই শীত ও কুয়াশা অব্যাহত থাকতে পারে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।’