নিজস্ব প্রতিবেদক: লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এখন বিএনপিতে এক অনাহুত ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। তার কথা শুনছে না বিএনপির নেতারা। বরং বিএনপি নেতারা মনে করছেন তারেক জিয়ার কারণে বিএনপির এই দুরবস্থা, তার অপরিপক্ক অপরিণামদর্শী নেতৃত্ব বিএনপিকে এখন পথে বসিয়েছে। আর তাই তার কথা বিএনপি নেতারা শুনছেন না।
শুধু যে মাঠ পর্যায়ের নেতা বা ছোট নেতা তারা নন, এমনকি বিএনপির কারান্তরীণ মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং কারান্তরীণ প্রভাবশালী স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও তারেকের কথায় কান দিচ্ছেন না। তারা দুইজনই তারেকের নির্দেশ অমান্য করে জামিনের আবেদন করেছেন এবং একাধিক মামলায় তারা জামিনও পেয়েছেন।
লন্ডনে পলাতক বিএনপির এই নেতা নির্বাচনের আগে তথাকথিত অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। এই অসহযোগ আন্দোলনে তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে বলেছিলেন তারা কেউ যেন আদালতে না যায়, জামিনের জন্য হাজিরা না দেয় এবং আইনগত প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ না করে। এমনকি বিএনপির এই দুর্বৃত্ত নেতা এটাও বলেছিলেন, সরকারকে যেন কেউ খাজনা, ট্যাক্স না দেয়। কিন্তু বিএনপির কোন নেতাই তার কথা শোনেননি। সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।’
তারেক নির্দেশ অমান্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আইনজীবীরা আদালতে দৌড়াদৌড়ি করছেন এবং তার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো আছে সেই মামলাগুলোতে জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ইতোমধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাধিক মামলা থেকে জামিন পেয়েছেন। তার যে বাকি মামলাগুলো আছে, সেই মামলাগুলোতেও জামিন নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির আরেক নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও আজ চারটি মামলায় ইতোমধ্যে জামিন নিয়েছেন। আর বাকি মামলাগুলো থেকে জামিন নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আমীর খসরু মাহমুদ এর পরিবার ইতোমধ্যে আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন এবং এই আইনজীবীরা অন্যান্য মামলাগুলো থেকে যত দ্রুত সম্ভব জামিন নেওয়ার জন্য দেন দরবার করছেন। আর এর মধ্য দিয়ে তারেক জিয়ার নির্দেশকে প্রত্যাখ্যান করল বিএনপি।
তারেক জিয়ার নির্দেশনা অমান্য করে এই দুইজন নেতাই যে শুধু আদালতে ধর্না দিচ্ছেন তা না। বিএনপির অন্তত এক হাজার নেতা এখন বিভিন্ন মামলায় জামিনের জন্য আদালতে যাচ্ছেন। তাছাড়া যারা জামিন পেয়েছেন, তাদেরকেও আদালতে নির্দিষ্ট দিনে হাজিরা দিতে হয় এবং এই হাজিরা দেওয়ার জন্য তারা আদালতে যাচ্ছেন।’
বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, তারেক জিয়া যে নির্দেশ দিয়েছেন তা উদ্ভট অবাস্তব। লন্ডনে বসে আরাম আয়েশের জীবনযাপন করে এ ধরনের নির্দেশনা দেওয়া যায়। কিন্তু বাস্তবে এই ধরনের নির্দেশনা প্রতিপালন করা অসম্ভব ব্যাপার। একটি নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন যদি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আদালতের কাছে প্রার্থনা করেন জামিনের জন্য তাহলে তিনি কোন দিনই জামিন পাবেন না এবং এটি নিয়ে কোন মহলেই কোন কথা বলতে পারবেন না। আর এর ফল ভোগ করতে হতে তাদেরকে এবং তাদের পরিবারকে। আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বা আমীর খসরু মাহমুদ এর মতো বহু নেতা তারেক জিয়ার কথাকে আর পাত্তা দিচ্ছেন না। বরং যে যার মতো করে আইনজীবী নিয়োগ দিচ্চেন এবং আইনজীবীর মাধ্যমে তারা তাদের জামিনের জন্য চেষ্টা করছেন এবং তাদের মামলাগুলোকে সুরাহ করার চেষ্টা করছেন। এর ফলে বিএনপিতে তারেকের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন এবং তারেক জিয়াকে নিয়ে এখন বিএনপির নেতারা বিরক্তি প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন, এই দলটির আজকের দুরাবস্থার জন্য প্রধান দায়ী তারেক জিয়াই।’