নিজস্ব প্রতিবেদক: চীন বিএনপির মধ্যে এখন সবচেয়ে বড় গুঞ্জন এবং আলোচনার বিষয় হল সরকারের সাথে গোপন সমঝোতা। বিএনপির মাঠ পর্যায়ের একাধিক নেতা মনে করছেন যে, নির্বাচনের আগে তারেক জিয়ার সঙ্গে আওয়ামী লীগের একটি গোপন সমঝোতা হয়েছে। এই সমঝোতার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছেন যুক্তরাজ্যে অবস্থিত বিএনপির সভাপতি আব্দুল মালেক। আব্দুল মালেক যুক্তরাজ্য থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন এবং সেখানে প্রধানমন্ত্রী তাকে চায়ের দাওয়াত দিয়েছিলেন। এসময় প্রকাশ্যে যদিও আব্দুল মালেক অনেক বড় বড় কথা বলেছেন কিন্তু গোপনে তিনি তারেকের পক্ষ থেকে সরকারের সঙ্গে একটি গোপন সমঝোতা করেছেন বলেও বিএনপির মধ্যে চাউর হয়েছে। এই গুঞ্জন বিএনপিতে এখন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।’
বিএনপির অনেক নেতাকর্মী বিশ্বাস করেন যে, তারেক জিয়া অর্থের বিনিময়ে সবকিছু করতে পারেন। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তিনি আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠে গোল করার সুযোগ দিয়েছেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি এবং আওয়ামী লীগ যেন বাধাহীনভাবে আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত দেশ পরিচালনা করতে পারে তারও মুচলেকা দিয়েছেন।’
বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করলে দেখা যায় যে, তাদের মধ্যে এ ধরনের গুঞ্জন রয়েছে। তবে প্রকাশ্যে এ ব্যাপারে কেউ কোন কিছু স্বীকার করেন না। তবে প্রকাশ্যে বিএনপি নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে জোরালো এবং শাঁসালো বক্তব্য দিয়ে আসছেন।
বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে যে, যখন বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলছিল, ঠিক সেই সময় সরকারের পক্ষ থেকে একটি মহল তারেকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেই যোগাযোগের সূত্র ধরেই তারেক একটি বিপুল পরিমাণ অর্থ চান, যে অর্থ পেলে তিনি বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখবেন এবং বিএনপিকে ছাড়া সরকার যেন একটি নির্বাচন করতে পারে সে ব্যাপারে নিশ্চিয়তা দেন। একটু সাজানো আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বৈধতা দেবে এবং নির্বাচনের পর রাজনৈতিক কর্মসূচিকে আস্তে আস্তে স্তিমিত করে ফেলা হবে, যাতে সরকার নির্বিঘ্নে পরবর্তী পাঁচ বছর দেশ পরিচালনা করতে পারে। এই এই সমঝোতার ব্যাপারে বিএনপির পক্ষ থেকে তারেকের প্রতিনিধিত্ব করেন লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি আব্দুল মালেক। যিনি তারেকের পৃষ্ঠপোষক বটে। তারেকের অবৈধ অর্থ তার মাধ্যমেই বৈধ হয় এবং মালিকের মাধ্যমেই লন্ডনে তারেক চাঁদাবাজি করেন এবং বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন।’
অনেকে মনে করেন যে, মালেক যখন যুক্তরাজ্য থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গেল তখনই বোঝা যাচ্ছিল যে একটা কিছু গন্ডগোল হতে যাচ্ছে। সরকারের সাথে একটি গোপন সমঝোতা হয়ে যাচ্ছে। এরপর মালেককে প্রধানমন্ত্রী চা চক্রের আমন্ত্রণ জানান। পরবর্তীতে মালেক এ নিয়ে নানারকম নাটক করেন।’
কিন্তু বিভিন্ন সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রীর চায়ের দাওয়াতটা ছিল একটি সমাপনী পর্ব। এটি ছিল শেষ মুহূর্তে সমঝোতা চূড়ান্তকরণের প্রকাশ। এর আগেই বিভিন্ন মহল তারেকের সঙ্গে আপসরফা চূড়ান্ত করে ফেলেছিল। সেই আপসরফার চূড়ান্ত অংশ হিসেবেই তারেক শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় ছিল। কারণ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশগুলো বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছিল যে, বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যেতে পারে তাহলে তারা ফলাফল ভালো করতে পারে। এমনকি যদি বিএনপি ৭০ থেকে ৮০ টি আসন পেত তাহলে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকতে পারত। কিন্তু সমঝোতার অংশ হিসেবেই বিএনপি নির্বাচন থেকে তাদের গুটিয়ে নেয়। না নির্বাচন, না আন্দোলনের কৌশল হিসেবে এখন বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে মৃদু সমালোচনা করে সরকারকে এক রকমের বৈধতা দিয়েছে। আগামী পাঁচ বছর যেন আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনা করতে পারে সেব্যাপারে তারা তাদের মৌন সম্মতির প্রকাশ দেখা যাচ্ছে। এ কারণেই বিএনপি আন্দোলনের কর্মসূচিকে গুটিয়ে নিয়ে সংগঠন গুছানোর ব্যাপারে গুরুত্ব দিচ্ছে।’