নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভিতরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে এক গ্রুপের ওপর আরেক গ্রুপের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় চিকিৎসকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চাপাতিসহ চারজনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। আটক হওয়া চারজন হলেন, বাপি মিয়া (২৪), আদিব (২৩) নাসির (২৫) নাবিল (২৭)। তারা সবাই খিলগাঁও থানার বাসিন্দা।
শনিবার (৩১ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।
তিনি বলেন, খিলগাঁও এর সিপাহীবাগ এলাকায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষের একটি ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনায় আহত এক গ্রুপ ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে আসে। পরে অন্য আরেকটি গ্রুপ চাপাতি নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভিতরে ঢুকে যায়। এ সময় চারজনকে আটক করে সেনাবাহিনীর কাছে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে, এদিকে নিজ কর্মস্থলে এমন নিগ্রহের প্রতিবাদে কঠোর প্রতিবাদ ও দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে চিকিৎসকদের সংগঠন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ)। শনিবার (৩১ আগস্ট’) এনডিএফের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম ও জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক’) হাসপাতালে একজন রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসকদের ওপর যে হামলা ও লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটেছে, এনডিএফ তার তীব্র নিন্দা জানায়। সংগঠনটি এই ধরনের বর্বরোচিত আক্রমণকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং চিকিৎসক সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ হিসেবে অভিহিত করে।
এনডিএফ আরও জানায়, চিকিৎসকরা রোগীদের জীবন বাঁচাতে দিনরাত কাজ করেন। এ ধরনের আক্রমণ তাদের মানসিক ও শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত করতে পারে। এজন্য, তারা দোষীদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।
এছাড়া ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসকদের ওপর হামলার খবরে ফেসবুক লাইভে আসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি জানান, কিছুক্ষণ আগে ঢামেক হাসপাতালে অপ্রত্যাশিত ঘটনা হয়েছে। রোগী মারা যাওয়ায় সংক্ষুব্ধ একটি পক্ষ এই হামলা চালিয়েছে। এ বিষয়ে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যথাপোযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। একইসঙ্গে বলেন, চিকিৎসকদের তাদের মতো করে কাজ করতে দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন।’
হাসনাত বলেন, একটি বিষয়ে আমি আপনাদের স্পষ্ট করতে চাই, আমাদের গণঅভ্যুত্থান যে মূল স্পিরিট ছিল, আমাদের গণঅভ্যুত্থানের যে জায়গাটি ছিল, সেই জায়গাটি ন্যায্যতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হবে। একটি সিস্টেম ডেভেলপ করবে এবং এই সিস্টেমের মধ্য থেকে আমাদের সমাজ, আমাদের রাষ্ট্র, তথা আমাদের দেশ পরিচালিত হবে। এখন বিভিন্ন জায়গা থেকে এই ধরনের কাজগুলো করা হচ্ছে, আজকে ডাক্তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করা হলো।
তিনি আরও বলেন, আপনি যদি ফোর্স করেন যে আমার রোগীকে বাঁচিয়ে দিতে হবে, এখনই বাঁচিয়ে দিতে হবে, বাঁচিয়ে দিতেই হবে-এটা তো প্রফেশনালিজমের মধ্যে পড়ে না।