নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে ঘুষ-দুর্নীতিতে নিমজ্জিত বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি’র) কিশোরগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (এসওডি) মোঃ মফিজুল ইসলাম ও সহকারী প্রকৌশলী (এসওডি) মওদুদ আহমেদ তমালকে অপসারণ করলো ময়মনসিংহ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কার্যালয়।
কিশোরগঞ্জ জেলা পল্লী বিদ্যুৎ ঠিকাদার সমিতির আন্দোলনে তোপের মুখে ২ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে জেলা শহরের গাইটাল (বিআরইবি’র) কিশোরগঞ্জ কার্যালয় থেকে অপসারীত হয়ে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন তিনি।
বেলা বারোটায় পূর্বঘোষিত কিশোরগঞ্জ জেলা পল্লী বিদ্যুৎ ঠিকাদার সমিতির একদফা দাবিতে মানববন্ধন বিক্ষোভ মিছিল ও অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে আন্দোলনকারীরা। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে অফিসের কার্যক্রম বন্ধ করে নির্বাহী প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলীসহ সবাইকে অফিস থেকে বের করে দেয়। নির্বাহী প্রকৌশলী বাহিরে এসে মুঠোফোনে উর্ধ্বতন কর্মকতাকে অবহিত করলে, ত্বত্তাবধায়ক প্রকৌশলি রেজাউল করিম তাকে ময়মনসিংহ অফিসে চলে আসার নির্দেশ দেন।
পরে আন্দোলনকারীরা একে অপরের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করে আনন্দ মিছিল নিয়ে মুকশেদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ে প্রবেশ করে কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) প্রকৌশলী মোঃ ইমদাদুল ইসলামের কাছে আরও কিছু দাবি-দাওয়া পেশ করেন।
কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ ঠিকাদার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক তানভির হাসনাইন বলেন,আমরা (পবিস) এর ইস্যুকৃত কাজের মালামালের চাহিদাপত্র নিয়ে গেলে (বিআরইবি’র) নির্বাহী প্রকৌশলী এবং সহকারী প্রকৌশলীর সাথে আগে রফাদফা করতে হয়! প্রতি কার্যাদেশের জন্য তাদেরকে ২০ হাজার টাকা করে দিতে হবে নইলে আমাদের মালামাল ইস্যু করবেন না। তিনি আরো বলেন এইসব বিষয়ে আমরা বহুবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি তাই আজকে আন্দোলনে বাধ্য হয়েছি।
কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ ঠিকাদার সমিতির সভাপতি এনামুল কবির জুলহাস বলেন, এই ঘুষখোরা দুর্নীতিবাজ অফিসারদের জন্য আমরা সঠিকভাবে কাজ করতে পারিনা তাই তাদের অপসারণের দাবিতে আমরা আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আজ দুজন ঘুষখোরা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা অপসারীত হয়ে চলে যেতে বাধ্য হন।
এ ব্যাপারে বিআরইবি কিশোরগঞ্জের স্থানীয় অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী (এসওডি’) মোঃ মফিজুল ইসলাম এর কাছে এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আন্দোলনকারীদের তুপের মুখে আমি অফিস থেকে বের হতে বাধ্য হই। কিন্তু তারা অফিসে এসে উচ্চ-বাচ্ছ আচরণ ছাড়া কাউকে নির্যাতন বা অফিসের কোনো ক্ষয়ক্ষতি করেনি।
কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) প্রকৌশলী মোঃ ইমদাদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এব্যাপারে অবগত হয়েছি এবং আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। উনারাই অচিরেই একটা ভালো স্বীদ্ধান্ত নিবেন।
কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ ঠিকাদার সমিতির সভাপতি এনামুল কবির জুলহাস, সাধারণ সম্পাদক আ: কাইয়ুম, আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক তানভীর হাছনাইন, সহ-সমন্বয়ক সোহেল রানা, জসিম উদ্দিন, রুমেল সহ সমিতির সকল নেতৃবৃন্দ ও সদস্যগণ আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করে।’