
ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: ক্রিকেট উন্মাদনার দিক থেকে ভারতকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। কারণ এশিয়ার এই দেশটিতে ক্রিকেট প্রেমীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আর এজন্যই মূলত সারা বিশ্বের এই খেলার আনুষ্ঠানিক সবচেয়ে বড় পদের একটি ধরা হয় ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচের পদকে।
এতদিন ধরে ভারত ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ এই পদে রবি শাস্ত্রী, রাহুল ড্রাভিডদের মতো সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটারদের রাজত্বই বেশি ছিল। শুধু তাই নয়, তারা সফলও হয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি পুরনো কোচের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় নতুন কোচ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিসিসিআই। আর এটি নিয়ে ইতোমধ্যেই ক্রিকেট দুনিয়ায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।’
বিসিসিআই এই গুরুত্বপূর্ণ পদে আবেদনকারীদের সুবিধার্থে নিজেদের ওয়েবসাইটে একটি গুগল ফর্মের ব্যবস্থা রাখে। এই ফর্ম পূরণ করে আবেদনের সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। আর এই সুবিধা নিয়েই ভুয়া আবেদনকারীরা বিসিসিআইয়ে অনেকটা ‘গণহারে’ আবেদন করেছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এবং টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, রোহিত-কোহলির কোচ হতে তিন হাজারের বেশি আবেদন পেয়েছে বিসিসিআই। তবে এই আবেদনগুলির মধ্যে বেশিরভাগই ভুয়া ব্যক্তির কাছ থেকে এসেছে। এই ভুয়া আবেদনকারীদের মধ্যে আছেন সাবেক ক্রিকেটার, জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব এবং রাজনীতিবিদও।
সোমবার (২৭ মে) কোচ হওয়ার আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল। শেষ দিনে বিসিসিআইয়ের সূত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে আবেদনে পাওয়া নামগুলো জানায়। সেখানে দেখা যায়, টেন্ডুলকার, ধোনি, হরভজন সিং, বীরেন্দ্র সেবাগসহ অন্যান্য সাবেক ক্রিকেটারদের নামেও একাধিক আবেদন পেয়েছে তারা। এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মতো রাজনীতিবিদদের নামেও ভুয়া আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার (১৩ মে) বিসিসিআই গুগল ফর্মের মাধ্যমে প্রধান কোচের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করে এবং প্রতিদিনই অনেক ভুয়া আবেদনপত্র পেতে থাকে। এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয় যে, দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছা নিয়ে কোনো প্রকৃত প্রার্থী আবেদন করেছেন কিনা।
ভারতীয় বোর্ড ও ভুয়া আবেদনকারীদের মধ্যকার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। ২০২২ সালে বিসিসিআই যখন প্রধান কোচ পদে আবেদন আহ্বান করেছিল, তখনও প্রায় ৫,০০০ ভুয়া আবেদন পেয়েছিল, যেখানে আবেদনকারীরা সেলিব্রিটির নাম ব্যবহার করেছিল। তখন আবেদনকারীদের মেইল করার জন্য বলা হয়েছিল, এবার তারা গুগল ফর্ম ব্যবহার করেছে।
এই ব্যাপারে বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গত বছরও, বিসিসিআই একই রকম প্রতিক্রিয়া পেয়েছিল, যেখানে ভুয়া আবেদনকারীরা আবেদন করেছিল। এবারও গল্প একই। কারণ বিসিসিআই গুগল ফর্মে আবেদন আহ্বান করেছিল, এটি করার কারণ হলো এতে এক শিটে আবেদনকারীদের নাম যাচাই করা সহজ।’
রোহিতদের কোচ হওয়ার বিজ্ঞপ্তিতে অবশ্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলী উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ২০২৭ সালের দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিতব্য ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত নির্বাচিত কোচকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
পরবর্তী প্রধান কোচ তার মেয়াদ শুরু করবেন আগামী মাসে যুক্তরাষ্ট্র এবং ক্যারিবিয়ানে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরপরই। বর্তমান প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়, যিনি ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তা আর বাড়াতে আগ্রহী নন।’