নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, নির্বাচনের পরও নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হচ্ছে’। একটি মহল এই নির্বাচন বাতিলের জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে নানা রকম চক্রান্ত করছে। এই বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া গিয়েছিল যখন দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা টিআইবি একটি মনগড়া বানোয়াট হাস্যকর একপেশে রিপোর্ট তৈরি করেছিল। এই রিপোর্টে নির্বাচনকে পাতানো খেলা এবং ভোটদানের হার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। টিআইবি রিপোর্টের পর দিনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ম্যাথিউ মিলার বাংলাদেশে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি বলে উচ্চারণ করেন। একই সাথে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেবে কি না এ ধরনের প্রশ্নে রহস্যময় উত্তর দেন। এই প্রেক্ষিতে আরও গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে শেষ পর্যন্ত কী হতে যাচ্ছে? নতুন সরকারকে কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমারা মেনে নেবে? এর ফলে কি সরকার টিকতে পারবে? কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শঙ্কার কালো মেঘ কেটে গেছে। নতুন সরকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পূর্ণতা পেয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস নতুন সরকার গঠিত হওয়ার এক সপ্তাহ পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টানা চতুর্থ বার দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য আনুষ্ঠানিক অভিনন্দন জানিয়েছেন। জাতিসংঘের মহাসচিবের এই অভিনন্দন বার্তা স্বীকৃতির নামান্তর। এর মাধ্যমে জাতিসংঘ ৭ জানুয়ারি নির্বাচন এবং ১১ জানুয়ারিতে গঠিত নতুন সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিল। জাতিসংঘ যখন স্বীকৃতি দেয় তখন এই নির্বাচন নিয়ে আর নতুন কোন বিতর্কের অবকাশ নেই বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
শুধু জাতিসংঘ নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম কৌশলগত অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো একের পর এক আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।’
বিএনপি এবং সুশীলের সঙ্গে কূটনৈতিক লড়াইয়ে কৌশলগতভাবে আওয়ামী লীগ এখন সুবিধাজনক অবস্থানে চলে গেল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে জাতিসংঘের স্বীকৃতির মাধ্যমে নির্বাচনকে বিতর্কিত করার ষড়যন্ত্রের শেষ চেষ্টা ব্যর্থ হল। কারণ নির্বাচনের পরেই লক্ষ্য করা গেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার কিছু একপেশে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছিলেন। জাতিসংঘ যেন বাংলাদেশের নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্যতা না দেয়, মহাসচিব যেন নতুন সরকারকে অভিনন্দন না জানায় এ জন্য আন্তর্জাতিক মহলে লবিং হয়েছিল, হয়েছিল নানামুখী চেষ্টা তদবির। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘ নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে সমস্ত সংশয় দূর করল। এর ফলে বিএনপি এবং সুশীলরা নির্বাচনকে বিতর্কিত করা এবং প্রশ্নবিদ্ধর যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল তা একেবারেই ভেস্তে গেল বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একা যদি বাংলাদেশের নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করে তাহলে সেটি তেমন কোন গুরুত্ব পাবে না অথবা এ রকম পরিস্থিতিতে যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে নিষেধাজ্ঞা দেয় সেটিও আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্ক সৃষ্টি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর এ প্রেক্ষিতেই বাংলাদেশের নতুন সরকার কূটনৈতিক লড়াইয়ে প্রথম দফায় জয়ী হল বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।’