নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা চতুর্থ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামী লীগ একদিকে যেমন নানারকম চাপে আছে তেমনি নানারকম সঙ্কট ক্রমশ দানা বেধে উঠছে। তবে আওয়ামী লীগের সামনে কোন রাজনৈতিক সংকট নেই, আন্তর্জাতিক চাপও নেই। বরং জনজীবনের নানা কষ্ট এবং দুর্ভোগ আওয়ামী লীগ সরকারকে রীতিমতো চাপে ফেলেছে। জনজীবনে বিভিন্ন অস্বস্তি মোকাবেলা করা আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য এখন চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে’।
সাম্প্রতিক সময়ে জনজীবনে যেসমস্ত ইস্যুতে অস্বস্তি বাড়ছে তার মধ্যে রয়েছে…
দ্রব্যমূল্য: দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত অসহনীয় হয়ে উঠছে। বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে এবং এটি সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে ইতিমধ্যেই চলে গেছে। দ্রব্যমূল্যের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দ্রব্যমূল্য নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অস্বস্তি এখন রীতিমতো ক্ষোভে পরিণত হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের নজরদারী আরো বাড়ানো প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
বিদ্যুৎ সংকট: তীব্র দাবদাহে বিদ্যুৎ সংকট জনজীবনের জন্য একটি দুর্ভোগের কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে এখন লোড শেডিং আস্তে আস্তে বাড়ছে। সামনের দিনগুলোতে এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে তা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন। বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলা করতে না পারলে সরকারের জন্য একটি জনঅসন্তোষের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা-বন্ধ: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা এবং বন্ধ নিয়েও জনগণের মধ্যে অস্বস্তি তৈরী হয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তীব্র দাবদাহে খোলা রাখা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবস্থান অভিভাবকরা মেনে নিতে পারছেন না। এবং তারা এনিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে হাইকোর্টের নির্দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে শিক্ষা কার্যক্রম সামনের দিনগুলোতে কোন পথে যায় সেনিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নানারকম প্রতিক্রিয়া হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
কিশোর গ্যাং: গত কয়েক মাসে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ব একটি জন অশান্তির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় নানারকম কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচার, তাদের নানারকম অপরাধ সাধারণ মানুষকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে ফেলেছে। সাধারণ মানুষ মনে করছে যে, দ্রুত এ সমস্ত কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এবং এ ব্যবস্থা যদি গ্রহণ না করা হয় সেটিও এক ধরনের জনঅশান্তির কারণ সৃষ্টি করবে বলেই সাধারণ মানুষ মনে করছেন। কারো কারো ধারণা এইসব কিশোর গ্যাংয়ের সাথে রাজনৈতিক যোগসূত্র রয়েছে। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অপরাধী অপরাধীই। সে যে দলই করুক না কেন তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে তৎপর। তবে কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে কোন দৃশ্যমান শক্ত অবস্থান সরকারের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়নি। এবিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা সময়ের দাবি বলেও অনেকে মনে করছেন। না হলে এ পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে।
দুর্ঘটনা: সড়ক এবং রেল দুর্ঘটনা জনজীবনে অস্বস্তির আরো বড় একটি কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। প্রতিনিয়ত নানারকম দুর্ঘটনায় জনগণের মধ্যে এক ধরনের আতংক ছড়িয়ে পড়ছে। এ ব্যাপারেও সরকারকে একটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলে অনেকে মনে করছেন।’