
নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের মনিরামপুরে জামায়াত নেতার আলমসাধু ভর্তি মাছ লুট করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যের ঘেরের মাছ মনে করে লুট করা হয় বলে জানা গেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি’) উপজেলার কালীবাড়ি থেকে কপালিয়া বাজারে মাছ নিয়ে যাওয়ার সময় ঘটনাটি ঘটলেও রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বিষয়টি জানাজানি হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যের বাড়ি মনিরামপুরের দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নে। স্থানীয় ঘুঘুদা বিলে তাঁর মাছের ঘের রয়েছে। সরকার পতনের পর স্থানীয় তৌহিদ নামের এক ব্যক্তির কাছে ঘের দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন লেখক। তৌহিদ ঘেরের মাছ ধরে বিক্রি করেন। এতে বিএনপির লোকজন বাধা দেয়। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে লেখক ভট্টাচার্য্যের ঘের থেকে মাছ ধরে আলমসাধু যোগে কপালিয়া বাজারে বিক্রির জন্য পাঠানো হয়।
অপরদিকে একই সময়ে নিজেদের ঘেরের মাছ ধরে আলমসাধু যোগে কপালিয়া বাজারের আড়তে পাঠান জামায়াত নেতা লেয়াকত হোসেনসহ কয়েকজন। পথিমধ্যে কালীবাড়ি মোড় থেকে কপালিয়া বাজারে যাওয়ার পথে জামায়াত নেতাদের মাছ লুট করে নেন স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন কর্মী।’
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, মূলত লেখকের ঘের থেকে ধরা মাছ লুট করতে গিয়ে তথ্যের ভুলে জামায়াত নেতার মাছ লুটের ঘটনা ঘটে। মাছ বিক্রির টাকা হজম করতে না পেরে শনিবার রাতে এক সালিস বৈঠকের মাধ্যমে টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন মাছ লুটপাটে অভিযুক্ত নেতাকর্মীরা।
কুলটিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক আবু নসর বলেন, ‘এলাকায় আমাদের তিনটি ঘের আছে। আমাদের সাবেক থানা আমির লেয়াকত হোসেনসহ কয়েকজনে ঘেরে মাছ চাষ করি। শনিবার দুটি ঘের থেকে ১৮ থেকে ২০ মণ মাছ ধরে গাড়ি করে কপালিয়া বাজারে আড়তে বিক্রির জন্য পাঠানো হয়ে। রাস্তায় কিছু লোক গাড়িসহ মাছ ছিনিয়ে নিয়ে বিক্রি করে দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘লুট করা মাছ তারা ৯৩ হাজার টাকায় বিক্রির কথা স্বীকার করেছে। চাপ দিয়ে তাদের কাছ থেকে ৮৯ হাজার টাকা উদ্ধার করেছি। এলাকার কিছু লোক এর সঙ্গে জড়িত আছে। সব তথ্য উদ্ধারের পর নিজেরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে থানায় অভিযোগ করার কথা ভাবছি।’
এ বিষয়ে নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান বলেন, ‘শনিবার বিকেলে জামায়াত নেতা লেয়াকত হোসেনের কাছে মাছ ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনে আমরা তৎপর হই। পরে সিসি টিভির ফুটেজ দেখে মাহাবুব ও রাজিব নামে দুজনকে চিহ্নিত করা গেছে। আমরা তাদের কাছ থেকে মাছ বিক্রির টাকা উদ্ধার করে লেয়াকতের হাতে বুঝিয়ে দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাইপো সাইফুল এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। রাজিব ও মাহাবুব বিএনপির রাজনীতি করে। তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, মাছ লুটের বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ জানায়নি কেউ।’