নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে শূন্যপদগুলো পূরণ হচ্ছে। পাশাপাশি বেশ কিছু পরিবর্তন আসছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বিএনপি আন্দোলনকে নতুন ভাবে সংগঠিত করার জন্য স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করছে। দলের একটি পূর্ণাঙ্গ কাউন্সিল করারও পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কাউন্সিলটি চলতি বছরের শেষ নাগাদ অথবা আগামী বছর শুরুতে করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। আপৎকালীন সময়ে স্থায়ী কমিটির পুনর্গঠনকে গুরুত্ব দিচ্ছে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছে যে বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে নতুন মুখ আসছে এবং স্থায়ী কমিটিতে বড় ধরনের চমক আসছে।
কারা স্থায়ী কমিটিতে আসবে বা কারা স্থায়ী কমিটিতে যাবে সে সম্পর্কে লন্ডনে পলাতক বিএনপির চেয়ারম্যান তারেক জিয়া চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, অপেক্ষাকৃত তরুণ উদ্যমী এবং কর্মীদেরকে উজ্জীবিত করতে পারেন এমন নেতাদেরকে স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত করা হবে। দলের জন্য অবদান রাখতে পারবেন তাদেরকে স্থায়ী কমিটিতে আনা হবে। এখন বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে যারা কার্যক্রম করতে পারছেন না, যারা নিষ্ক্রিয় রয়েছেন বা অসুস্থ হয়েছেন তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখিয়ে তাদেরকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে উপদেষ্টামণ্ডলীতে নিয়ে যাওয়া হবে। স্থায়ী কমিটিতে আনা হবে যারা রাজপথে আন্দোলন করেন, কর্মীদেরকে নেতৃত্ব দিতে পারেন এরকম ব্যক্তিদেরকে। সেই বিবেচনায় অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে আসছেন এটি মোটামুটি নিশ্চিত। একাধিক সূত্র বলছে, ইতোমধ্যে রুহুল কবির রিজভীকে এ ব্যাপারে ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে।’
এখনও স্থায়ী কমিটির কয়েকটি পদ খালি রয়েছে। যে কোন সময়ে রিজভী বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। এ ছাড়াও বিএনপির তরুণ নেতা এবং বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আবদুল্লাহ আল নোমান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে তার অন্তর্ভুক্ত না হওয়াটাই ছিল একটি বড় বিস্ময়।’
বিভিন্ন সূত্র বলছে, লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সাথে বিরোধের কারণেই তাকে স্থায়ী কমিটি থেকে ছিটকে দেওয়া হয় এবং তার চেয়ে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদেরকে স্থায়ী কমিটিতে আনা হয়। এই নিয়ে আবদুল্লাহ আল নোমানের অনেক দুঃখ বেদনা হতাশা ছিল। কিন্তু তারপরও তিনি দলের জন্য কাজ করছেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে আন্দোলন সংগ্রামে তার উপস্থিতি ছিল উজ্জ্বল। তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, তারেক জিয়ার সঙ্গে তার যে বিরোধিতা তা তিনি মিটিয়ে ফেলতে পেরেছেন। আর এই মিটিয়ে ফেলার কারণেই এখন স্থায়ী কমিটিতে তার অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।
বিএনপির আরেকজন নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু যিনি বিভিন্ন সময়ে বিএনপির আর্থিক বিষয়গুলো দেখাশোনা করেন, তিনি স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলে কেউ কেউ বলছেন। কারণ আবদুল আউয়াল মিন্টু দলের অনেক নীতিনির্ধারণী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে আবদুল আউয়াল মিন্টুর পরিচিত থাকার কারণে স্থায়ী কমিটির স্থায়ী কমিটিতে তার অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। তারেক জিয়া অত্যন্ত প্রিয়ভাজন হিসেবে পরিচিত রুমিন ফারহানা স্থায়ী কমিটিতে আসলে সেটি হবে চমক এবং এ রকম চমকের সৃষ্টি বিএনপিতে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, রুমিন ফারহানা স্থায়ী কমিটির সদস্য না হলেও এখনও বিএনপির বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী কর্মকাণ্ডে তাকে দেখা যায় এবং তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় একক ভাবে তারেক জিয়ার সাথে কথা বলেন। তারেক জিয়ার সাথে তার বিশেষ সখ্যতা থাকার কারণে তিনি ইতোমধ্যে অঘোষিত ভাবে স্থায়ী কমিটির সদস্য বলে অনেকে বিবেচনা করেন। এবার তার আনুষ্ঠানিক ভাবে স্থায়ী কমিটিতে অভিষেক হলে অবাধ হবার কিছু থাকবে না।
ড্যাবের সভাপতি এবং চিকিৎসকদের নেতা ডা. জাহিদ এর স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনার কথাও বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে। বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, খুব শীঘ্রই স্থায়ী কমিটির পুনর্গঠন বা সম্প্রসারণ দেখা যেতে পারে।’