নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের উপ-গ্রুপ বিজয়ের দুটি দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে জড়ানো এক গ্রুপের নেতাকর্মীরা সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসাইনের অনুসারী এবং আরেকাংশের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগ নেতা সাখাওয়াত হোসাইনের অনুসারী।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি’) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে সোহরাওয়ার্দী হলের মোড়ে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনসূত্র এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, জুনিয়রকে শাসনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী হলের মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিজয়ের একাংশের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হল মোড়ে এবং আরেকাংশের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে খেলার মাঠে অবস্থান নেয়। উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাপাল্টির ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের হাতে দেশীয় অস্ত্র রামদা, চাপাতি নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায়।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে আইইআর বিভাগের ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকতা বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মামুনকে দা দিয়ে আঘাতের চেষ্টা করে। এ সময় মামুন পালিয়ে তার হলে (আলাওলে) চলে যায়। এরপর ইলিয়াসের অনুসারীরা দেশীয় অস্ত্র হাতে শহীদুলকে ধাওয়া দেওয়ার জন্য আসে। এ সময় ভুল বোঝাবুঝিতে সোহরাওয়ার্দী হল সাখাওয়াত গ্রুপের (মকু বিজয়) অনুসারীদের মুখোমুখি হয় তারা।
বিজয় গ্রুপের একাংশের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াসের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এক জুনিয়রকে সোহরাওয়ার্দী হল থেকে কয়েকজন ছেলে বের হয়ে মারধর করে। বর্তমানে তার অবস্থা খারাপ। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ভর্তি করা হয়েছে।’
বিজয় গ্রুপের আরেকাংশের নেতা সাখাওয়াত হোসাইন জানান, আজকের এই ঘটনার জন্য আমার বা আমার জুনিয়রদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। এটা সম্পূর্ণই তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। তারা অতর্কিতভাবে আমাদের হলে আক্রমণ চালায়। এতে করে আমার একজন জুনিয়র আহত হয়েছে। আমি তাদের বলেছি আমার কোনো জুনিয়র যদি এর সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তাকে আমি আইনের হাতে তুলে দেব।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইলিয়াসের অনুসারীরা তার (শহীদ) দুটি দোকান ভাঙচুর করেছে। শহীদুল জানান, ইলিয়াস কিছুদিন আগেও জুনিয়র দিয়ে আমাদের সঙ্গে বেয়াদবি করিয়েছে, যারা আমাদের থেকেই রাজনীতি শিখেছে। আজকে তাদেরকে আমরা একটু শাসন করেছি। এই শাসন করাতেই আজকের এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এরপরে তারা হল থেকে সবাইকে নিয়ে এসে আমার দোকানে ভাঙচুর ও ক্যাশ থেকে টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়। এমনকি আমার স্টাফদের গায়েও হাত তুলেছে। হোটেলের ১০-১৫ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
ভুক্তভোগী মামুনকে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. নুরুল আজিম সিকদার বলেন, মারামারির খবর পেয়েই আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে হাজির হই এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। আমরা এখন পর্যন্ত একজনের মাথায় আঘাতসহ দুজনের আহতের খবর পেয়েছি। এখন পরিবেশ শান্ত আছে। উভয়পক্ষই নিজ নিজ হলে অবস্থান করছে।’