নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সাতটি দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় সংলাপ শুরুর কথা রয়েছে।
আজ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণফোরাম, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, জাতীয় পার্টি-বিজেপি (পার্থ), ১২ দলীয় জোট, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, লেবার পার্টিসহ আরও কয়েকটি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার এটি হবে চতুর্থ দফা সংলাপ।
তবে এবারও এখন পর্যন্ত ডাক পায়নি জাতীয় পার্টি (জাপা)। আওয়ামী লীগ আমলে সরকারের সুরে কথা বলে গৃহপালিত বিরোধী দলের তকমা পায় জাতীয় পার্টি।
এর আগে গত ৫ অক্টোবর তৃতীয় সংলাপে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, হেফাজতে ইসলাম, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপ করেন প্রধান উপদেষ্টা। সেবারও ডাক পায়নি জি এম কাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি।
এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মনিরুল ইসলাম মিলন জানান, তারা (জাতীয় পার্টি) এখনো আমন্ত্রণ পাননি। তবে ভবিষ্যতে তাদের ডাকার সম্ভাবনা আছে।
এদিকে আওয়ামী লীগ ও দলটির নেতৃত্বাধীন জোটের কেউ এই সংলাপে আমন্ত্রণ পাননি বলে জানা গেছে। আর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন ড. ইউনূস। সেদিন থেকে দলটি ও তাদের ১৪ দলের শরিকরা একপ্রকার নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছে। সংলাপ নিয়ে দলগুলোর পক্ষ থেকে কেউ কিছু বলছেও না।
অনেকে জাতীয় পার্টিকে (জাপা’) আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারিতার সহযোগী হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়ে সংলাপে না ডাকার আহ্বান জানান।
গত ৮ অক্টোবর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে বলেন, ‘আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে ফ্যাসিবাদের সহযোগী জাতীয় পার্টিকে সংলাপে ডাকা হচ্ছে না।’
এর আগের এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হলে আমরা সেই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও কঠোর বিরোধিতা করবো।’
শনিবার আমন্ত্রিত রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা জানান, মূলত রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনি রোডম্যাপ নিয়ে তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলবেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের গত সাড়ে ১৫ বছরের শাসন আমলে দুর্নীতি ও বিদেশে অর্থ পাচার, গণতন্ত্রপন্থি রাজনৈতিক দলের কর্মী ও ভিন্নমতের মানুষদের গুম, খুন এবং জুলাই-আগস্টে গুলি করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার এবং বিচারের মুখোমুখি করার দাবিও তুলবে দলগুলো।
আদালত কর্তৃক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনতেও ড. ইউনূস সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাবে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল।
এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বাজার সিন্ডিকেট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ইত্যাদি নানা ইস্যুতে কথা বলবে রাজনৈতিক দলগুলো। পাশাপাশি নিজ নিজ দল বা জোটের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রস্তাবনাও দেবেন তারা।’