নিজস্ব প্রতিবেদক: সব গ্যাস বিতরণ কোম্পানির প্রি পেইড মিটার ভাড়া সমান করে দেওয়া হয়েছে। চলতি মাস থেকেই সব কোম্পানির গ্রাহককে মিটার ভাড়া বাবদ ২০০ টাকা করে দিতে হবে।
আগে কোনও কোনও কোম্পানি মিটার ভাড়া ২০০ টাকা নিতো, আবার কোনও কোনও কোম্পানি ১০০ টাকা। চলতি বছরের শুরু থেকে সবাই একই পরিমাণ মিটার ভাড়া নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জানা যায়, চলতি মাসে তিতাস গ্যাসের অনেক গ্রাহক প্রি পেইড মিটারে টাকা রিচার্জ করতে গিয়ে জানতে পারেন মিটার ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। হঠাৎ করেই কোনও ঘোষণা না দিয়ে মিটার ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাসের প্রি পেইড মিটারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আমরা অন্যান্য বিতরণ কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জানুয়ারি মাস থেকে সবগুলো কোম্পানির গ্রাহকই মিটার ভাড়া বাবদ ২০০ টাকা করে দেবে।
তিনি জানান, প্রথম যখন তিতাস প্রি পেইড মিটার বসাতে শুরু করে তখন মিটার ভাড়া বাবদ ৬০ টাকা কাটা হতো। এরপর ২০২৩ সালের জুন মাসে তা বাড়িয়ে ১০০ টাকা করা হয়। সেটাই এবার সব কোম্পানির সঙ্গে মিলিয়ে সমন্বয় করা হলো।
এই মিটার ভাড়া একজন গ্রাহককে কতদিন দিতে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি মিটারের আয়ুষ্কাল ১০ বছর। আর আমরা প্রতি মাসে নিচ্ছি ২০০ টাকা। সে হিসেবে ১০ বছরে গ্রাহকের যাবে ২৪ হাজার টাকা।
এদিকে তিতাসের একটি প্রি পেইড মিটার কিনে এনে বসাতেই পরিচালনা খরচসহ ব্যয় হচ্ছে ২৫ হাজার টাকার মতো।
জানা যায়, জালালাবাদ গ্যাস বিতরণ কোম্পানি অনেক আগে থেকেই গ্রাহকদের কাছ থেকে মিটার ভাড়া বাবদ ২০০ টাকা প্রতি মাসেই আদায় করতো। এদিকে কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি, তিতাস গ্যাস কোম্পানি আবার ১০০ টাকা করে আদায় করতো। এই বৈষম্য দূর করতে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সবগুলো বিতরণ কোম্পানি তাদের মিটার ভাড়া ২০০ টাকায় সমন্বয় করেছে।’
প্রসঙ্গত, শীতের কারণে অনেক এলাকায় গ্যাস সরবরাহ খুবই কমে গেছে। অনেকেই দিনের বেলা গ্যাস পাচ্ছেন না। রাতে গ্যাসের চাপ বাড়লেও ভোরে চলে যাচ্ছে।
এ বিষয়টি সম্প্রতি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও স্বীকার করেন। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী চলমান সংকটে সাধারণ মানুষের কষ্টের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, এই সংকট কাটতে আরও কিছু দিন সময় প্রয়োজন হবে। মার্চের মধ্যে সংকট কেটে যাবে বলেও তিনি জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের দুটি এলএনজি টার্মিনালের মধ্যে একটি সংস্কারের জন্য দেশের বাইরে রয়েছে। এ কারণে শীতে চলমান গ্যাস সংকট আরও বেড়েছে। এলএনজি টার্মিনালটি সংস্কার শেষে দেশে না আসা পর্যন্ত গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধি করা পেট্রোবাংলার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। প্রতি বছর শীতে পাইপ লাইনের মধ্যে পানি জমার কারণে গ্যাসের সংকট সৃষ্টি হয়। একইভাবে তাপমাত্রা কমে যাওয়াতে গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এবার সেই সংকটের সঙ্গে সরবরাহের অপ্রতুলতা যোগ হওয়াতে গ্যাস সংকট বেড়েছে। শীতের সংকটের কারণে বাসাবাড়িতে চুলা জ্বলতে সমস্যা হচ্ছে। একইসঙ্গে শিল্পেও গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে মিটার ভাড়া বৃদ্ধিই আসলেই গ্রাহকদের মূল ক্ষোভের কারণ।’