নিজস্ব প্রতিবেদক: লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া কোটা আন্দোলনের কলকাঠি নাড়াচ্ছেন এমন নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। কোটা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্তত তিনজন নেতার সঙ্গে তারেক জিয়ার কথা হয়েছে বলে নিশ্চেত তথ্য পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, কোটা আন্দোলনে পরামর্শক হিসেবে কাজ করা আসিফ নজরুলসহ বিএনপিপন্থী একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে লন্ডনে পলাতক যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দণ্ডিত এই ব্যক্তি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
তারেক জিয়ার পরামর্শের কারণেই আদালতের রায়ের পরও কোটা আন্দোলনকারীরা রাজপথ থেকে সরে আসেনি। বরং গতকাল তারা সাড়ে তিনটা থেকে সড়ক অবরোধ করেছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সাথে বিনা উস্কানিতে সহিংসতায় জড়িয়েছে। আজ বিকেলে আবার কোটা নিয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে।
ছাত্রদলের কমিটি গঠনের পর থেকেই তারেক জিয়া কোটা আন্দোলনকে নতুন করে সম্পৃক্ত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ কারণেই ছাত্রদলের নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কারা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, কারা ২০১৮ এর কোটা বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন তাদের খোঁজখবর নেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছিল। সেই প্রশ্নপত্রগুলোতে আটটি বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল যে, ২০০৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তাদের অবদান, তখন তারা কি করেছেন, পরিবারের রাজনৈতিক ঐতিহ্য কি, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সাথে তারা যুক্ত ছিলেন কিনা, কোটা আন্দোলনের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা ছিল কিনা, জেল খেটেছিলেন কিনা ইত্যাদি।
এখান থেকে বুঝা যায়, যারা কোটা আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন তাদেরকে বাছাই করার ক্ষেত্রে তারেক জিয়া অগ্রাধিকার দিয়েছেন। এখন ছাত্রদলের কমিটিতে এমন অন্তত ৮ জন রয়েছেন যারা ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন এবং মূল নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করেছেন।
এছাড়া ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময়ে যেসমস্ত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছিলেন তাদের সাথেও তারেক জিয়ার নিবিড় যোগাযোগ তখনও ছিল এখন তারা নতুন করে এটি শুরু করেছে।
উল্লেখ্য যে, হাইকোর্টের রায়ের পর থেকে কোটা আন্দোলনকে আবার নতুন করে চালু করার জন্য চেষ্টা করেছিল শিক্ষার্থীরা। কিন্তু প্রথমদিকে এ আন্দোলনে তেমন কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। দুটি কারণে আন্দোলনের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ ছিল না। প্রথমত যারা এর নেতৃত্বে যারা ছিলেন তাদের সাংগঠনিক দক্ষতার অভাব ছিল। দ্বিতীয়ত এ ধরনের আন্দোলন পরিচালনা করার জন্য যে আর্থিক ব্যবস্থাপনা দরকার সেটির ব্যাপারেও তাদের সীমাবদ্ধতা ছিল।’
তবে এই সময়ে ছাত্রদলের কমিটি গঠিত হয় এবং ছাত্রদলের কিছু নেতা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যোগযোগ শুরু করে। একই সঙ্গে ছাত্রদলের ওই নেতারা ছাত্র শিবিরের নেটওয়ার্ককে কাজে লাগানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে। আর এক কারণেই ছাত্রদল এবং ছাত্র শিবিরের যৌথ প্রযোজনায় কোটা আন্দোলনকে বেগবান করা হয়। এর নেপথ্যে লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া রয়েছেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য যে, আপিল বিভাগ যেদিন হাইকোর্টের রায়ে স্থিতাবস্থা জারি করে সেদিন অধিকাংশ আন্দোলনকারীরা আন্দোলন থেকে সাময়িক বিরতি দেওয়ার পক্ষে ছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত শিবির এবং ছাত্রদল নিয়ন্ত্রিত অংশের চাপের কারণে আন্দোলন অব্যাহত রাখা হয়েছে। তাছাড়া বিএনপিপন্থী শিক্ষকরাও আন্দোলনে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অচলাবস্থা রিবাজ করছে। আর এ কারণেই শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ এখন কোটা আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। আর সবকিছুতে কলকাঠি নাড়াচ্ছে লন্ডনে পলাতক দুর্ধর্ষ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দণ্ডিত এই ব্যক্তি।’